ভারতে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা: যান্ত্রিক ত্রুটি না চালকের ভুল?

অনলাইন ডেস্ক

ভারতের ওড়িশা রাজ্যে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহত বেড়ে ২৬১ জনে দাঁড়িয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছে আরও ছয় শতাধিক। রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত উদ্ধারকাজ শেষ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় গণমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে ওড়িশার বালাসোর জেলার বাহাঙ্গাবাজার এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। কিন্তু কীভাবে ঘটল এই দুর্ঘটনা? এর পেছনের কারণ যান্ত্রিক ত্রুটি নাকি চালকের ভুল?

প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী, সিগন্যালিং কন্ট্রোল রুমের ভিডিওয় দেখা গেছে যে, ভুল লাইনে ঢুকে পড়েছে শালিমার-চেন্নাই সেন্ট্রাল করমন্ডল এক্সপ্রেস। তবে এখনও বিষয়টি নিয়ে ভারতীয় রেলের পক্ষ থেকে সরকারিভাবে কিছু জানানো হয়নি। ওই মহলের মতে, পূর্ণাঙ্গ তদন্ত রিপোর্ট আসার পরেই করমন্ডল এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ জানা যাবে। যে ঘটনায় ইতোমধ্যে উচ্চপর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব।
রেলের এক শীর্ষকর্তা জানিয়েছেন, খড়গপুর ডিভিশনের সিগন্যালিং রুমের ভিডিওতে দেখা গেছে, স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬ টা ৫৫ মিনিটে ওড়িশার বালাসোর জেলার বাহাঙ্গাবাজার স্টেশন পেরিয়ে লুপ লাইনে ঢুকে পড়ে করমন্ডল এক্সপ্রেস। যে লুপ লাইনে আগে থেকেই একটি মালগাড়ি দাঁড়িয়েছিল। মূলত মেইন লাইন ধরে ভুবনেশ্বরের দিকে বেরিয়ে যাওয়ার কথা ছিল করমন্ডল এক্সপ্রেসের। সেই ভুলের কারণেই ভয়াবহ এই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে। যে ভিডিওর ভিত্তিতে প্রাথমিকভাবে ভয়াবহ দুর্ঘটনার সম্ভাব্য কারণ উঠে এসেছে, সেই ভিডিওটি ভারতের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম ‘হিন্দুস্তান টাইমস’ হাতে পাওয়ার দাবি করেছে। ওই ভিডিওতে নাকি দেখা গেছে যে, দুটি মেইন লাইন এবং দুটি লুপ লাইন আছে।

ভারতীয় রেল মন্ত্রণালয়ের এক শীর্ষকর্তা জানিয়েছেন, শুক্রবার সন্ধ্যায় যখন দুর্ঘটনার কবলে পড়ে করমন্ডল এক্সপ্রেস, তখন সেটি ঘণ্টায় ১২৭ কিলোমিটার বেগে ছুটছিল, যা দক্ষিণ-পূর্ব রেলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ট্রেনের সাধারণ গতিবেগ। সেইসময় লুপ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা মালগাড়িতে ধাক্কা মারে করমন্ডল এক্সপ্রেস। লুপ লাইন থেকে কয়েকটি বগি ছিটকে মেইন লাইনে চলে যায়। কিছুক্ষণ পরে সেই মেইন লাইন দিয়ে আসে এসএমভিটি বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস। সেটি করমন্ডলের ছিটকে যাওয়া কোচে ধাক্কা মারে। লাইনচ্যুত হয়ে যায় ওই ট্রেনেরও কয়েকটি বগি।

তবে চালকের ভুলে নাকি অন্য কারও ভুলে সেই দুর্ঘটনা ঘটেছে, তা নিয়ে এখনও কিছু বলতে চাইছেন না ভারতীয় রেলের কর্তারা। নাম গোপন রাখার শর্তে বিষয়টি নিয়ে রেলের এক শীর্ষকর্তা বলেছেন, “কীভাবে সেই দুর্ঘটনা ঘটেছে, কেন দুর্ঘটনা হয়েছে, তা পূর্ণাঙ্গ তদন্তের পর বোঝা যাবে। ইতোমধ্যে উচ্চপর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে রেলওয়ে বোর্ড। তবে প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে যে প্রযুক্তিগত কারণে নয়, বরং মানুষের ভুলেই সেই দুর্ঘটনা ঘটেছে।” সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights