ভিডিও ফুটেজে শনাক্ত হামলাকারীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক
কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে রাজধানীসহ সারা দেশে সরকারি স্থাপনায় ভাঙচুর, সহিংসতা ও নাশকতামূলক কর্মকান্ডে জড়িতদের শনাক্ত করা হচ্ছে। ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণে বেরিয়ে আসছে হামলাকারীদের নাম-পরিচয়। ফুটেজ দেখেই ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গা ঢাকা দেওয়া হামলাকারীদের বিষয়ে তথ্য চেয়ে পুলিশ সদর দপ্তর বিভিন্ন স্থানে বার্তা পাঠিয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছে, শুধু পুলিশের কাছে থাকা ফুটেজ নয়, ফুটেজ আসছে বিভিন্ন সোর্সের মাধ্যমে। বিভিন্ন এলাকায় সহিংসতার সময় সাধারণ মানুষ অনেক ভিডিও করেছে। সেই সব ভিডিও তারা গোপনে পুলিশের কাছে পাঠাচ্ছে। সেই সব ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। পুলিশের পদস্থ কর্মকর্তারা বলছেন, যারা হামলাকারীদের বিষয়ে তথ্য দিয়ে সহায়তা করবেন, তাদের পুরস্কৃত করা হবে। গোয়েন্দা নজরদারিতে আছেন আন্দোলনে থাকা নেতৃত্বস্থানীয়রা। পুলিশ সদর দপ্তর জানিয়েছে, কোটা সংস্কার আন্দোলনে নাশকতা সৃষ্টিকারীদের বিষয়ে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে নাশকতা সৃষ্টিকারী ও দুষ্কৃতকারীদের সম্পর্কে তথ্য এবং অপরাধীর নাশকতার সময়ের ছবি/ভিডিও ফুটেজ দিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সহযোগিতার জন্য বিশেষ বার্তা দিয়েছে। জেলার এসপিদের মাধ্যমে সারা দেশে এই বার্তা পাঠানো হচ্ছে। তথ্য প্রদানকারীর পরিচয় গোপন রাখা হবে বলে বার্তায় জানানো হয়েছে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, নাশকতার ঘটনায় সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে জড়িতদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। তিনি বলেন, আমাদের হাতে আসা সিসিটিভি ফুটেজে দুষ্কৃতকারীরা কীভাবে আগুন লাগায় এবং মালামাল লুট করে তার ছবি আছে। এ ঘটনায় জড়িত অনেকের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে। সবাইকে গ্রেপ্তার করা হবে। মহাখালী সেতু ভবনে ঢুকে লুটপাটকারী দুজনকে গ্রেপ্তারসহ ভাঙচুর চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনায় মোট নয়জনকে গ্রেপ্তারের পর একথা বলেন তিনি। এরা হলেন- জজ মিয়া ও মো. রাকিব (২২)। মঙ্গলবার দিবাগত রাতে মহাখালী থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হারুন অর রশীদ নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, আন্দোলনের নামে ঢাকা শহরে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ এবং লুটপাট করা হয়েছে। মনোবল ভেঙে দেওয়ার জন্য পুলিশকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা ও আহত করেছে। তথ্যপ্রযুক্তি ডাটা সেন্টারসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় হামলা চালানো হয়। হামলার রসদ সরবরাহ করার তথ্যপ্রমাণ আমাদের হাতে আছে।
মহাখালীর সেতু ভবনে জামায়াত-শিবির ও বিএনপির কিছু নেতা টাকা-পয়সা দিয়ে সাততলা বস্তি এবং কুড়িল বস্তিসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন সংগ্রহ করেছে। এর পর মহাখালীতে জড়ো হয়ে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। পরবর্তী সময়ে তারা সেতু ভবনে ঢুকে ভাঙচুর চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং লুটপাট চালায়। এ ঘটনায় জড়িত অনেকের নাম-পরিচয় পেয়েছি। হারুন বলেন, গ্রেপ্তার দুজনের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে সাত বিএনপি ও জামায়াত নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা হলেন- ঢাকা উত্তর যুবদলের সাবেক সভাপতি এস এম জাহাঙ্গীর, বিএনপি নেতা বরকত উল্লাহ বুলুর ছেলে সানিয়াত বুলু, মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সহসভাপতি মোশারফ হোসেন খোকন ওরফে কাইল্লা খোকন, কৃষক দলের সহসভাপতি নাসির উদ্দিন, ছাত্রদলের সহসাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান দয়াল, জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতা এস এম কামাল উদ্দিন ও ভাটারা থানা জামায়াতের আমির রেজাউল করিম।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) যুগ্ম কমিশনার (অপারেশন) বিপ্লব কুমার সরকার জানান, নাশকতা, সহিংসতার ঘটনায় যারা জড়িত তাদের ভিডিও ধরে ধরে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। একজন নিরপরাধ লোকও যেন জেলে না ঢুকে, এজন্য আমরা বিশ্লেষণ করছি। যারা প্রকৃত সন্ত্রাসী তাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। বিপ্লব বলেন, ঢাকা মহানগরীতে কয়েকদিনের যে নাশকতা, সন্ত্রাসী কর্মকান্ড হয়েছে, যেভাবে থানাসহ অন্যান্য সরকারি স্থাপনা পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে এটি কোনোভাবে ছাত্রদের আন্দোলন হতে পারে না। এটি নিশ্চিতভাবে বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীরা ছাত্রদের আন্দোলনে মিশে ছাত্র আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রভাবিত করার জন্য এ কাজটা করেছে। এই নাশকতা, অগ্নিসন্ত্রাসের সঙ্গে সাধারণ ছাত্র, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য ছাত্ররা কোনোভাবে জড়িত নয়। তিনি বলেন, ২০১৩ সাল থেকে শুরু করে ২০২৩ সাল পর্যন্ত যারা বিভিন্ন সময়ে অগ্নিসংন্ত্রাস করেছে, বাস পুড়িয়েছে, ট্রেন পুড়িয়েছে, বিএনপি-জামায়াতের চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা প্রত্যক্ষভাবে অংশ নিয়েছে, মদদ দিয়েছে, বিনিয়োগ করেছে, নির্দেশ দিয়েছে। তাদের অনেক তথ্য পেয়েছি, আরও পাচ্ছি। যেসব জায়গায় আক্রমণ হয়েছে সব ফুটেজ আমরা পাচ্ছি, অসংখ্য ওপেন সোর্স থেকে ভিডিও পাচ্ছি।

নারায়ণগঞ্জ : নারায়ণগঞ্জে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনা ভাঙচুর, লুটপাট ও নাশকতায় সরাসরি জড়িত সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল দুপুরে জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সামনে প্রেস ব্রিফিংয়ে জেলা পুলিশ সুপার এ তথ্য জানান। তিনি জানান, নাশকতার ঘটনায় গত ৭২ ঘণ্টায় জেলার বিভিন্ন থানায় ৯টি মামলা হয়েছে। আটক হয়েছে ৩০৯ জন। প্রেস ব্রিফিংয়ে বলা হয়, নারায়ণগঞ্জে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনায় নাশকতার ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারীদের নাম বের হয়ে এসেছে। এদের মধ্যে মূল নেতৃত্ব দেয় জামাতনেতা ফতুল্লার মাসুদ মেম্বার। যুবদল নেতা মামুনের নেতৃত্বে সাইনবোর্ড, জালকুড়ি ও ভূঁইগড় এলাকায় বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি স্থাপনায় ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা কোটা আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাঢ়া মোড়, ২ নম্বর রেলগেট, সদর থানা, ফতুল্লা থানার জালকুড়ি, ভূঁইগড়, সাইনবোর্ড, সিদ্ধিরগঞ্জ থানার শিমরাইল, চিটাগাং রোড, ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের মোড়ে পুলিশের ওপর আক্রমণ, সরকারি অফিস, ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর করে। এ ছাড়া নারায়ণগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস ও পুলিশ পিবিআই অফিস ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে। গ্রেপ্তারকৃতরা গত ১৯ জুলাই কাঁচপুর মেঘনা টোল প্লাজা, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মদনপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় সড়ক অবরোধ করে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর অগ্নিসংয়োগ করে। এ ছাড়া ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড এসবি গার্মেন্ট, যুবউন্নয়ন অধিদপ্তর, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন, সাইনবোর্ড হাইওয়ে পুলিশ বক্স, বন্দর ধামগড় ফাঁড়ি, জালকুড়ি শীতল বাস ডিপো পুড়িয়ে দেয়। ২০ জুলাই শিমরাইল ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের মোড়ে হাইওয়ে পুলিশ বক্সে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসযোগ করে। একপর্যায়ে ২১ জুলাই পুলিশ, বিজিবি, র‌্যাব, সেনাবাহিনী যৌথ অভিযান চালিয়ে নাশকতাকারীদের বিতাড়িত করে পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণ নেয়। নিজস্ব প্রতিবেদক
ভিডিও ফুটেজে শনাক্ত হামলাকারীরা
কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে রাজধানীসহ সারা দেশে সরকারি স্থাপনায় ভাঙচুর, সহিংসতা ও নাশকতামূলক কর্মকান্ডে জড়িতদের শনাক্ত করা হচ্ছে। ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণে বেরিয়ে আসছে হামলাকারীদের নাম-পরিচয়। ফুটেজ দেখেই ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গা ঢাকা দেওয়া হামলাকারীদের বিষয়ে তথ্য চেয়ে পুলিশ সদর দপ্তর বিভিন্ন স্থানে বার্তা পাঠিয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছে, শুধু পুলিশের কাছে থাকা ফুটেজ নয়, ফুটেজ আসছে বিভিন্ন সোর্সের মাধ্যমে। বিভিন্ন এলাকায় সহিংসতার সময় সাধারণ মানুষ অনেক ভিডিও করেছে। সেই সব ভিডিও তারা গোপনে পুলিশের কাছে পাঠাচ্ছে। সেই সব ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। পুলিশের পদস্থ কর্মকর্তারা বলছেন, যারা হামলাকারীদের বিষয়ে তথ্য দিয়ে সহায়তা করবেন, তাদের পুরস্কৃত করা হবে। গোয়েন্দা নজরদারিতে আছেন আন্দোলনে থাকা নেতৃত্বস্থানীয়রা। পুলিশ সদর দপ্তর জানিয়েছে, কোটা সংস্কার আন্দোলনে নাশকতা সৃষ্টিকারীদের বিষয়ে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে নাশকতা সৃষ্টিকারী ও দুষ্কৃতকারীদের সম্পর্কে তথ্য এবং অপরাধীর নাশকতার সময়ের ছবি/ভিডিও ফুটেজ দিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সহযোগিতার জন্য বিশেষ বার্তা দিয়েছে। জেলার এসপিদের মাধ্যমে সারা দেশে এই বার্তা পাঠানো হচ্ছে। তথ্য প্রদানকারীর পরিচয় গোপন রাখা হবে বলে বার্তায় জানানো হয়েছে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, নাশকতার ঘটনায় সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে জড়িতদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। তিনি বলেন, আমাদের হাতে আসা সিসিটিভি ফুটেজে দুষ্কৃতকারীরা কীভাবে আগুন লাগায় এবং মালামাল লুট করে তার ছবি আছে। এ ঘটনায় জড়িত অনেকের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে। সবাইকে গ্রেপ্তার করা হবে। মহাখালী সেতু ভবনে ঢুকে লুটপাটকারী দুজনকে গ্রেপ্তারসহ ভাঙচুর চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনায় মোট নয়জনকে গ্রেপ্তারের পর একথা বলেন তিনি। এরা হলেন- জজ মিয়া ও মো. রাকিব (২২)। মঙ্গলবার দিবাগত রাতে মহাখালী থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হারুন অর রশীদ নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, আন্দোলনের নামে ঢাকা শহরে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ এবং লুটপাট করা হয়েছে। মনোবল ভেঙে দেওয়ার জন্য পুলিশকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা ও আহত করেছে। তথ্যপ্রযুক্তি ডাটা সেন্টারসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় হামলা চালানো হয়। হামলার রসদ সরবরাহ করার তথ্যপ্রমাণ আমাদের হাতে আছে।
মহাখালীর সেতু ভবনে জামায়াত-শিবির ও বিএনপির কিছু নেতা টাকা-পয়সা দিয়ে সাততলা বস্তি এবং কুড়িল বস্তিসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন সংগ্রহ করেছে। এর পর মহাখালীতে জড়ো হয়ে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। পরবর্তী সময়ে তারা সেতু ভবনে ঢুকে ভাঙচুর চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং লুটপাট চালায়। এ ঘটনায় জড়িত অনেকের নাম-পরিচয় পেয়েছি। হারুন বলেন, গ্রেপ্তার দুজনের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে সাত বিএনপি ও জামায়াত নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা হলেন- ঢাকা উত্তর যুবদলের সাবেক সভাপতি এস এম জাহাঙ্গীর, বিএনপি নেতা বরকত উল্লাহ বুলুর ছেলে সানিয়াত বুলু, মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সহসভাপতি মোশারফ হোসেন খোকন ওরফে কাইল্লা খোকন, কৃষক দলের সহসভাপতি নাসির উদ্দিন, ছাত্রদলের সহসাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান দয়াল, জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতা এস এম কামাল উদ্দিন ও ভাটারা থানা জামায়াতের আমির রেজাউল করিম।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) যুগ্ম কমিশনার (অপারেশন) বিপ্লব কুমার সরকার জানান, নাশকতা, সহিংসতার ঘটনায় যারা জড়িত তাদের ভিডিও ধরে ধরে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। একজন নিরপরাধ লোকও যেন জেলে না ঢুকে, এজন্য আমরা বিশ্লেষণ করছি। যারা প্রকৃত সন্ত্রাসী তাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। বিপ্লব বলেন, ঢাকা মহানগরীতে কয়েকদিনের যে নাশকতা, সন্ত্রাসী কর্মকান্ড হয়েছে, যেভাবে থানাসহ অন্যান্য সরকারি স্থাপনা পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে এটি কোনোভাবে ছাত্রদের আন্দোলন হতে পারে না। এটি নিশ্চিতভাবে বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীরা ছাত্রদের আন্দোলনে মিশে ছাত্র আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রভাবিত করার জন্য এ কাজটা করেছে। এই নাশকতা, অগ্নিসন্ত্রাসের সঙ্গে সাধারণ ছাত্র, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য ছাত্ররা কোনোভাবে জড়িত নয়। তিনি বলেন, ২০১৩ সাল থেকে শুরু করে ২০২৩ সাল পর্যন্ত যারা বিভিন্ন সময়ে অগ্নিসংন্ত্রাস করেছে, বাস পুড়িয়েছে, ট্রেন পুড়িয়েছে, বিএনপি-জামায়াতের চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা প্রত্যক্ষভাবে অংশ নিয়েছে, মদদ দিয়েছে, বিনিয়োগ করেছে, নির্দেশ দিয়েছে। তাদের অনেক তথ্য পেয়েছি, আরও পাচ্ছি। যেসব জায়গায় আক্রমণ হয়েছে সব ফুটেজ আমরা পাচ্ছি, অসংখ্য ওপেন সোর্স থেকে ভিডিও পাচ্ছি।

নারায়ণগঞ্জ : নারায়ণগঞ্জে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনা ভাঙচুর, লুটপাট ও নাশকতায় সরাসরি জড়িত সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল দুপুরে জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সামনে প্রেস ব্রিফিংয়ে জেলা পুলিশ সুপার এ তথ্য জানান। তিনি জানান, নাশকতার ঘটনায় গত ৭২ ঘণ্টায় জেলার বিভিন্ন থানায় ৯টি মামলা হয়েছে। আটক হয়েছে ৩০৯ জন। প্রেস ব্রিফিংয়ে বলা হয়, নারায়ণগঞ্জে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনায় নাশকতার ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারীদের নাম বের হয়ে এসেছে। এদের মধ্যে মূল নেতৃত্ব দেয় জামাতনেতা ফতুল্লার মাসুদ মেম্বার। যুবদল নেতা মামুনের নেতৃত্বে সাইনবোর্ড, জালকুড়ি ও ভূঁইগড় এলাকায় বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি স্থাপনায় ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা কোটা আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাঢ়া মোড়, ২ নম্বর রেলগেট, সদর থানা, ফতুল্লা থানার জালকুড়ি, ভূঁইগড়, সাইনবোর্ড, সিদ্ধিরগঞ্জ থানার শিমরাইল, চিটাগাং রোড, ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের মোড়ে পুলিশের ওপর আক্রমণ, সরকারি অফিস, ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর করে। এ ছাড়া নারায়ণগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস ও পুলিশ পিবিআই অফিস ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে। গ্রেপ্তারকৃতরা গত ১৯ জুলাই কাঁচপুর মেঘনা টোল প্লাজা, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মদনপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় সড়ক অবরোধ করে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর অগ্নিসংয়োগ করে। এ ছাড়া ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড এসবি গার্মেন্ট, যুবউন্নয়ন অধিদপ্তর, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন, সাইনবোর্ড হাইওয়ে পুলিশ বক্স, বন্দর ধামগড় ফাঁড়ি, জালকুড়ি শীতল বাস ডিপো পুড়িয়ে দেয়। ২০ জুলাই শিমরাইল ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের মোড়ে হাইওয়ে পুলিশ বক্সে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসযোগ করে। একপর্যায়ে ২১ জুলাই পুলিশ, বিজিবি, র‌্যাব, সেনাবাহিনী যৌথ অভিযান চালিয়ে নাশকতাকারীদের বিতাড়িত করে পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণ নেয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights