ভূমিকম্পের আগ মুহূর্তে মরক্কোর আকাশে রহস্যজনক আলোর ঝলকানি! (ভিডিও)
অনলাইন ডেস্ক
গত শুক্রবার দিবাগত রাতে ভয়াবহ ভূমিকম্পে উত্তর আফ্রিকার দেশ মরক্কোয়। এতে রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত প্রায় ২ হাজার ৯০০ জনের নিহতের খবর জানা গেছে। এছাড়া আহতের সংখ্যা আড়াই হাজার বলে গণমাধ্যমের খবরে দাবি করা হয়েছে।
শতাব্দীরও বেশি সময়ের মধ্যে সবচেয়ে বড় ও প্রাণঘাতী এই ভূমিকম্প গত শুক্রবার স্থানীয় সময় রাত ১১টা ১১ মিনিটে মরক্কোর মধ্যাঞ্চলে আঘাত হানে। ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৬ দশমিক ৮। এর উৎপত্তিস্থল ছিল দেশটির সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত মারাক্কেশ শহর থেকে ৭১ কিলোমিটার দূরে অ্যাটলাস পর্বতমালা এলাকার ১৮ দশমিক ৫ কিলোমিটার গভীরে।
ভয়াবহ এই ভূমিকম্প আঘাত হানার আগ মুহূর্তে মারাক্কেশ শহরের আকাশে রহস্যজনক এক আলোর ঝলকানি দেখা যায়। সেখানকার বাসিন্দার সেই আলোর ঝলকানির একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করছেন।
এই ধরনের আলোকে নাকি ‘ভূমিকম্পের আলো’ বলা হয় এবং ভূমিকম্প যেখানে আঘাত হানে সেই স্থানের উপরেই সাধারণ এটি দেখা যায়। তবে এটি ঠিক কী কারণে হয় তার কোনো ব্যাখ্যা দিতে পারেনি কোনো বিশেষজ্ঞ।
নর্থ ক্যারোলিনা স্টেট ইউনিভার্সিটির পদার্থবিজ্ঞানী অধ্যাপক ক্যারেন ড্যানিয়েলস বলেছেন, “মানুষ চিরকালই এগুলো (আলো) সম্পর্কে বিস্মিত ছিল। এটি ওইসব রহস্যগুলোর একটি যা আমাদের চারপাশে ঘটে থাকে এবং কখনোই পুরোপুরি ব্যাখা করা যায় না।”
ভূমিকম্পের আলো অধ্যয়ন করা বা ব্যাখ্যা করা কঠিন। কারণ ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেওয়া অসম্ভব। কখন বা কোথায় ভূমিকম্প ঘটবে তা না জেনে, এগুলো শনাক্ত করতে পারে এমন সরঞ্জামাদি কোথায় স্থাপন করা হবে? ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থার মতে, এগুলোর সঙ্গে আদৌ ভূমিকম্পের কোনো সম্পর্ক আছে কি না তা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন কিছু বিশেষজ্ঞ।
তবে শতাব্দী পিছনে গেলে এই আলোর বিবরণ নিয়ে কিছু তথ্য জানা যায় বলে জানিয়েছেন বোস্টন কলেজের সিসমোলজিস্ট অধ্যাপক জন এবেল, যিনি উত্তর-পূর্ব মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভূমিকম্পের ইতিহাসের উপর বই লিখেছেন।
২০১৪ সালে একটি গবেষণায় দাবি করা হয়, ১৮, ১৯ এবং ২০ শতাব্দীতে ইউরোপ এবং আমেরিকা মহাদেশে ঘটে যাওয়া ৬৫টি ভূমিকম্প থেকে এ ধরনের বায়বীয় আলোর ঝলকানির রেকর্ড রয়েছে।
ভূমিকম্পের আগে আকাশের অনেক উপরে থেকে নিয়ে দিগন্তের নিচু পর্যন্ত বিভিন্ন ধরনের আলোর কথা জানিয়েছে মানুষ। এগুলো কয়েক মিনিট পর্যন্ত স্থায়ী হয়। আবার কিছু কিছু আলো বিদ্যুতের ঝলকানির অন-অফ ফ্ল্যাশ করে। এগুলো বিভিন্ন রঙে দেখা গেছে।
অধ্যাপক এবেল বলেন, “ওইসব ঘটনার (আলো) কোনটি আসলে সত্য, আর কোনটি তাদের কল্পনার বস্তু, সে ব্যাপারে আমরা সত্যিই কিছুই বলতে পারি না।”
প্রযুক্তির উন্নতির সঙ্গে এ ধরনের আলোর ঘটনা আরও প্রকাশ্যে আসছে। ড্যাশক্যাম, স্মার্টফোন এবং সোশ্যাল মিডিয়ার আবির্ভাবের কারণে ভূমিকম্পের আলোর বিভিন্ন ভিডিও আরও প্রকাশ্যে আসছে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, মেক্সিকোর গুয়েরেরো শহরে ২০২১ সালের ভূমিকম্পের সময় এই ধরনের আলোর ভিডিওগুলো আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। সূত্র: স্ট্রেইটস টাইমস