ভোগান্তি থেকে মুক্তিপাচ্ছেন প্রবাসীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক
ভোগান্তি থেকে মুক্তি পাচ্ছেন প্রবাসীরা। আগামীতে কোনো ধরনের ভোগান্তি ছাড়াই প্রবাসীদের সেবা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ ক্ষেত্রে কোনো আবেদনে তথ্যের ঘাটতি থাকলে বা কোনো দলিলাদি না থাকার কারণে কোনো প্রবাসীর আবেদন বাতিল না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সাংবিধানিক এ সংস্থাটি। সংশ্লিষ্ট প্রবাসীর শুনানি নেওয়া মাঠ কর্মকর্তাদের জন্য বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। প্রয়োজনে আত্মীয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে হলেও দলিলাদি সংগ্রহ করার সিদ্ধান্ত দিয়েছে সংস্থাটি। বর্তমানে সংযুক্ত আরব আমিরাত, যুক্তরাজ্য, ইতালি, কুয়েত, কাতার, সৌদি আরব ও মালয়েশিয়া প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটার হিসেবে নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইতালি, কুয়েত, কাতার, যুক্তরাজ্য ও মালয়েশিয়ায় স্মার্টকার্ড বিতরণের উদ্বোধনও হয়েছে। পরে পর্যায়ক্রমে ওমান, বাহরাইন, জর্ডান, সিঙ্গাপুর, লেবানন, লিবিয়া, অস্ট্রেলিয়া, মালদ্বীপে এনআইডি কার্যক্রম হাতে নেওয়ার কথা রয়েছে। শিগগিরই কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ায় চালু হবে এ সেবা।

ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, একজন প্রবাসীর পক্ষে সব সময় সব দলিল সংযুক্ত করা সম্ভব হয় না। ফলে মাঠ কর্মকর্তারা তাদের আবেদন সাধারণ নির্দেশনাবলির ধারাবাহিকতায় বাতিল করে দেন। এতে অনেক ভোগান্তির শিকার হন তারা। এ ছাড়া সময় ও অর্থের অপচয় হয়। অন্যদিকে জরুরি সেবা থেকেও বঞ্চিত হন তারা। বিষয়টি নিয়ে অনেকের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে প্রবাসীদের সেবা সহজ করার লক্ষ্যে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক মো. মাহবুব আলম তালুকদার ইতোমধ্যে নির্দেশনাটি মাঠ কর্মকর্তাদের পাঠিয়েছেন। এতে বলা হয়েছে, প্রবাসীদের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে সেবা দান করতে হবে। তাদের নিবন্ধনের ক্ষেত্রে আবেদনের সঙ্গে ডকুমেন্ট সংযুক্ত না থাকলে আবেদনকারীর শুনানি ছাড়া আবেদন বাতিল করা যাবে না।
প্রয়োজনে আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে যোগাযোগ করে ডকুমেন্ট সংগ্রহ করতে হবে।

এ বিষয়ে ইসি সচিব শফিউল আজিম বলেছেন, ‘এনআইডি সেবা সহজ করার লক্ষ্যে সব উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। প্রবাসীদের ভোটার হিসেবে নিবন্ধনের কাজ সাতটি দেশে চলমান আছে। যেখানে প্রবাসী আনুপাতিক হারে বেশি সেখানে আস্তে আস্তে চালু করব। শিগগিরই কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ায় চালু হবে এ সেবা।’

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনা পেয়ে কে এম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশন ২০১৯ সালে প্রবাসে এনআইডি সরবরাহের উদ্যোগ হাতে নেয়। এরপর ২০২০ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাজ্যপ্রবাসীদের অনলাইনে ভোটার করে নেওয়ার কার্যক্রম উদ্বোধন করে ইসি। এর আগে ২০১৯ সালের ১৮ নভেম্বর সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রবাসীদের মাঝে এ কার্যক্রম শুরু করা হয়। তার আগে একই বছর ৫ নভেম্বর মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত বাংলাদেশিদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তি এবং স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়ার অংশ হিসেবে অনলাইনে আবেদন নেওয়ার কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়। এরপর সৌদি আরব, সিঙ্গাপুর ও মালদ্বীপে থাকা বাংলাদেশিদের জন্যও এ সুযোগ চালু করা হয়।

সে সময় অনলাইনে আবেদন নিয়ে সে আবেদন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির উপজেলা থেকে যাচাই করে সত্যতা পেলে সংশ্লিষ্ট দেশে দূতাবাস থেকে এনআইডি সরবরাহের পরিকল্পনা ছিল। এরপর করোনা মহামারির কারণে থমকে যায় দূতাবাসের মাধ্যমে এ কার্যক্রম শুরুর পরিকল্পনা। কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন সম্প্রতি পদত্যাগী কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর সে কার্যক্রম ফের উজ্জীবিত করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights