মুক্ত হতে সিরাজগঞ্জ কারাগারে বন্দিদের বিক্ষোভ, নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি:

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঘিরে আটক হওয়া আসামিরা মহামান্য রাষ্টপতির নির্বাহী আদেশে সিরাজগঞ্জ কারাগার থেকে মুক্ত হওয়ার সময় অন্য আসামিরাও মুক্ত হওয়ার জন্য কারা অভ্যন্তরে বিক্ষোভ করেছেন।

এসময় টিয়ারসেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ ও কারাগারের ঘণ্টা বাজিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়। সংবাদ পেয়ে বিপুল সংখ্যক সেনাবাহিনীর সদস্য পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। বুধবার বিকেল পৌনে ৪টার দিকে সিরাজগঞ্জ কারাগারে এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও কারাগার সূত্র জানায়, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঘিরে সিরাজগঞ্জ জেলায় আটক হওয়া ব্যক্তিরা মহামান্য রাষ্ট্রপতির নির্বাহী আদেশে আদালতের মাধ্যমে মুক্তি পেয়ে মঙ্গলবার থেকে সিরাজগঞ্জ কারাগার থেকে মুক্ত হচ্ছেন। এ অবস্থায় বুধবার বিকেলে অন্য আসামিরাও কারামুক্ত হওয়ার জন্য কারা অভ্যন্তরে বিক্ষোভ করতে থাকে। একপর্যায়ে তারা কারাগারের ভিতরের প্রধান ফটক ও পিছনের দেয়াল ভাঙার চেষ্টা করেন। এ পরিস্থিতিতে তাৎক্ষণিক কারারক্ষীরা কারাগারের ভিতরে ও বাইরে ফাঁকা টিয়ারসেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে এবং কারাগারের সর্তক সংকেত (পাগলা ঘণ্টা) বাজিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। এসময় কারাগার ও আশপাশের এলাকায় আতংক ছড়িয়ে পড়ে। আগত লোকজন ছোটাছুটি করতে থাকেন। সংবাদ পেয়ে বিপুল সংখ্যক সেনাবাহিনীর সদস্য ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত কারাগারের অভ্যন্তরে ও বাইরে দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে।
এ প্রসঙ্গে সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক মীর মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান জানান, সিরাজগঞ্জ কারাগারের বন্দীরা কারা অভ্যন্তরে বিক্ষোভ করছিল। কারারক্ষীরা তাৎক্ষণিক ফাঁকা গুলিবর্ষণ ও সর্তক সংকেত বাজিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। সংবাদ পেয়ে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। বিক্ষোভে অংশ নেওয়া কোনো আসামি কারাগার থেকে বের হতে পারেনি। সার্বিক বিষয়ে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করছি।

এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ কারাগারের সুপার এস. এম. কামরুল হুদা জানান, নির্বাহী আদেশে আদালতের মাধ্যমে সিরাজগঞ্জ কারাগার থেকে মঙ্গলবার ১৫১জন এবং বুধবার সকালে আরো ২৩ জন মুক্ত হয়েছে। বর্তমানে কারাগারে বিভিন্ন মামলার ১৪১৩ জন বন্দি রয়েছে। এ অবস্থায় বিকেলে অন্যান্য মামলার আসামিরা নিজেদের মুক্তি দেওয়ার জন্য অনৈতিক দাবি করে কারাগারে বিক্ষোভ করার পাশাপাশি পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করেছিল। দ্রুত টিয়ারসেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ এবং সর্তক সংকেত বাজিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হয়। সেনা সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে এ কাজে সহযোগিতা করেন। কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি বা কারাগার থেকে কেউ পালাতে পারেনি। আদেশে মুক্ত হওয়ার মতো আর কোনো আসামি কারাগারে নেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights