মেয়র পদে মানবিক ডাক্তার শফিকুলের গণজোয়ার

সঞ্জয় দাস লিটু, পটুয়াখালী

পটুয়াখালী পৌরসভা নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই গণজোয়ার সৃষ্টি হচ্ছে মেয়র প্রার্থী মানবিক ডাক্তার মো. শফিকুল ইসলামের মোবাইল ফোন মার্কার সমর্থনে। উৎসবমুখর পরিবেশে দিনরাত চলে মোবাইল ফোন মার্কার কর্মীদের প্রচার-প্রচারণা। জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. শফিকুল ইসলামের পক্ষে জেলা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরাও একাট্টা হয়ে মাঠে নেমেছেন। আটঘাট বেঁধে মাঠে রয়েছেন ছাত্রলীগ, যুবলীগ, শ্রমিক লীগসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। রয়েছে জাতীয় পার্টির প্রকাশ্য পূর্ণ সমর্থন। জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. শফিকুল ইসলাম একজন মানবিক চিকিৎসক হিসেবে সব মহলে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি। নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে মোবাইল ফোন মার্কার পক্ষে দিনরাত তিনি যাচ্ছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। সাধারণ ভোটাররা তাঁকে মেয়র হিসেবে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। তাঁকেই মেয়র হিসেবে দেখতে চান। গত নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্তে তিনি মনোনয়ন না পাওয়ায় সরে দাঁড়িয়েছিলেন। তাই মূলত এবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ক্লিন ইমেজের নেতা ও মানবিক ডাক্তার হিসেবে তাঁর প্রতি সমর্থন গণজোয়ারে রূপ নিয়েছে। জানা যায়, রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান, পটুয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক সফল মেয়র ডাক্তার মো. শফিকুল ইসলাম ছাত্রলীগ থেকে শুরু করে নেতৃত্ব দিচ্ছেন জেলা আওয়ামী লীগের। ডাক্তার হয়েও তিনি চাকরি না নিয়ে মানবসেবার জন্য চলে আসেন নিজ এলাকায়।

জানা গেছে, পড়াশোনা শেষ করে পটুয়াখালী শহরের মুক্তি ক্লিনিক ও হেলথ কেয়ার ক্লিনিক নামে দুটি প্রাইভেট ক্লিনিক দিয়ে সাধারণ মানুষের সেবা শুরু করেন ডাক্তার মো. শফিকুল ইসলাম। দুটি ক্লিনিকেই গরিব-দুঃখী মানুষকে কোনো খরচ ছাড়াই সেবা দিয়ে দিনরাত মানুষের পাশে থাকতেন তিনি। প্রায় ৩০ হাজার রোগীকে বিনামূল্যে সেবা দিয়েছেন। এর মধ্যে অর্ধেক ছিল প্রসূতি মায়ের সিজারিয়ান অপারেশন। এমনকি রোগীর কাছে টাকা না থাকলে ওষুধের টাকাও দিয়ে পাশে দাঁড়িয়েছেন তিনি। তাই তাঁকে গরিবের ডাক্তার উপাধি দিয়েছে সাধারণ মানুষ। মূলত চিকিৎসাসেবা দিতে তার টাকার কোনো চাহিদা ছিল না কখনোই।

৯ নম্বর ওয়ার্ডের স্বাধীনতা সড়কের মোজাম্মেল হোসেন বলেন, ‘আমার মায়ের অ্যাপেন্ডিসাইটিস হয়েছিল। অপারেশনের জন্য তাঁর কাছে গিয়েছিলাম। বিনা পয়সায় অপারেশন করেছেন শফিক স্যার। বেড ভাড়াও নেননি।’
মুুক্তি ক্লিনিকের ম্যানেজার মো. সোহাগ মিয়া বলেন, ‘ডাক্তার মো. শফিকুল ইসলাম স্যার একজন হৃদয়বান এবং অত্যন্ত ভালোমানুষ। তিনি দিন নাই, রাত নাই মানুষকে সেবা দিয়েছেন। কত রোগী যে তার জন্য দোয়া করছেন তা আল্লাহই জানেন। স্যার কমপক্ষে ১৫ হাজার মা-বোনের অপারেশন বিনা পয়সায় করেছেন। গরিব মানুষ এলেই তাকে জিজ্ঞাসা করতেন ওষুধের টাকা আছে কি না। তিনি রোগীর ওষুধ কিনতেও টাকা দিতেন। এমনকি রিকশা ভাড়াও দিয়ে দিতেন। আমরা মাঝেমধ্যে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকতাম। এজন্যই মূলত তাঁর এ নির্বাচনে মোবাইল ফোন মার্কার সমর্থনে গণজোয়ার উঠেছে। তিনি বিপুল ভোটে বিজয়ী হবেন।’

ডাক্তার মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘২০১১ সালে মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর আমি সফলতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছি। পৌরসভাকে একটি আধুনিক পৌরসভায় উন্নীত করার কাজ শুরু করেছিলাম। আমি কোনো গরিব মানুষকে উচ্ছেদ করিনি। বরং সরকারি জমিতে যারা বসবাস করতেন তাদের প্রশাসন উচ্ছেদ করতে চেয়েছে; আমি বারবার তাদের জয়গায় বহাল রেখেছি। গরিব অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি। এখনো আমি সব মানুষের পাশে আছি এবং থাকব।’

পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলার সাবেক সফল চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মো. তারিকুজ্জামান মণি বলেন, ‘জেলা আওয়ামী লীগ দলীয়ভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে ডাক্তার শফিক ভাই আওয়ামী লীগের প্রার্থী। তাঁর প্রতীক মোবাইল ফোন। আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে তাঁর জন্য ভোটারের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভোট চাচ্ছি। তাই ৯ তারিখের নির্বাচনে তাঁর বিজয় সুনিশ্চিত।’ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী আলমগীর বলেন, ‘আমরা জেলা আওয়ামী লীগ দলীয়ভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে মাঠে নেমেছি। আমাদের প্রার্থী ডাক্তার মো. শফিকুল ইসলাম। তাঁর প্রতীক মোবাইল ফোন। তিনি মানবিক ডাক্তার এবং মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য।’ এবারের নির্বাচনে মেয়র পদে পাঁচজন লড়ছেন। তাঁরা হলেন সাবেক মেয়র ডাক্তার মো. শফিকুল ইসলাম, বর্তমান মেয়র মহিউদ্দিন আহমেদ, তাঁর বড় ভাই আবুল কালাম আজাদ, দি পটুয়াখালী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক মো. এনায়েত হোসেন ও নাসির উদ্দিন খান। ৯ মার্চ সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ইভিএমে ভোট গ্রহণ করা হবে। মোট ভোটার ৫০ হাজার ৬৯৯ জন। পুরুষ ২৩ হাজার ৯৪৭, মহিলা ২৬ হাজার ৭৫০ ও হিজড়া দুজন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights