মোনাজাত শেষে একসঙ্গে লাখো মুসল্লির ফেরা

মোহাম্মদ রুহুল আমিন। দুদিন আগে বিশ্ব ইজতেমায় অংশ নিতে টঙ্গীতে এসেছিলেন। এখন আখেরি মোনাজাত শেষে রাজধানীর কদমতলী যাবেন। কিন্তু তিনি কোনো যানবাহন পাচ্ছেন না। দু-একটা মোটরসাইকেল পেলেও ভাড়া বেশি।

রুহুল আমিন বলেন, যানবাহন নেই। যে দু-একটা আছে বাড়তি ভাড়া চাচ্ছে। রোববার (১৫ জানুয়ারি) আখেরি মোনাজাত শেষে এভাবেই ভোগান্তিতে পড়েন মুসল্লিসহ এই পথের অন্যান্য যাত্রীরা।

এর আগে সকাল ৯টা ৫৭ মিনিটে ইজতেমার প্রথম পর্বের আখেরি মোনাজাত শুরু হয়। চলে ২৩ মিনিট। মোনাজাত পরিচালনা করেন কাকরাইল মসজিদের ইমাম ও তাবলিগ জামাতের মুরব্বি মাওলানা মুহাম্মদ জুবায়ের আহমেদ। মোনাজাত শেষে ময়দান থেকে লাখ লাখ মুসল্লি নিজ নিজ গন্তব্যের দিকে রওয়ানা দেন। এতে করে যানবাহন সঙ্কটে পড়ে দুর্ভোগে পড়েন তারা। এর মধ্যে আবার টঙ্গী থেকে ৬-৭ কিলোমিটার পর্যন্ত মানবজটের সৃষ্টি হয়।

এতে করে কয়েক কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়েও মিলছে না গণপরিবহন। যে কয়েকটি পিকআপ ও মোটরসাইকেল আছে সেগুলো বাড়তি ভাড়া চাচ্ছে। এর মধ্যে আবার ইজতেমায় আসা নারীরা পড়েছেন বেশ ভোগান্তিতে।

তেমনই একজন শরিফা খাতুন। তিনি থাকেন রাজধানীর মধুবাগে। এক ঘণ্টা হেঁটেও কোনো যান পাচ্ছেন না। বলেন, আর হাঁটতে পারি না বাবা। টঙ্গী থেকে বাড্ডা ৪০০ টাকা ভাড়া চায়। এক ঘণ্টা হেঁটে এসেছি, তারপরও ভাড়া কমায় না।

এদিকে ভোর থেকে টঙ্গী চৌরাস্তা পর্যন্ত ৬ কিলোমিটার ও টঙ্গী থেকে পূবাইল পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার, টঙ্গী-আব্দুল্লাহপুর থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত ৬ কিলোমিটার, টঙ্গী থেকে আশুলিয়া সড়কের ৫ কিলোমিটার পর্যন্ত ইজতেমামুখী সব যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে মুসল্লিরা পায়ে হেঁটেই ওই সব দূরত্বের পথ পাড়ি দিয়ে মোনাজাত শেষে যে যার গন্তব্যে রওয়ানা দেন। এছাড়া বিভিন্ন জেলা থেকে আসা রিজার্ভ বাস ও অন্যান্য যানবাহন এবং মানুষের ভিড়ে রাজধানীর সড়কে যানজট দেখা গেছে।

এদিকে বিশ্ব ইজতেমায় যাতায়াতের সুবিধার্থে রেলওয়ে বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করেছে। তবে মোনাজাত শেষে একসঙ্গে লাখ লাখ মুসল্লির বাড়ি ফেরার জন্য তা ছিল অপর্যাপ্ত। ফলে মুসল্লিরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ট্রেনের ছাদ ও জানালায় ঝুলে গন্তব্যে রওয়ানা দেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights