যাকাত সমাজে ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য দূর করে: কাদের গনি চৌধুরী

অনলাইন প্রতিবেদক

বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী বলেছেন, যাকাতের মাধ্যমে সমাজে ধনী-দরিদ্রের মধ্যকার বিরাজমান বৈষম্য দূর করা সম্ভব। এতে অর্থনৈতিক সমতার ক্ষেত্রও প্রস্তুত হয়। আল্লাহর নির্দেশমতো যথাযথভাবে যাকাত প্রদান করলে সমাজের কোনো লোক অন্নহীন, বস্ত্রহীন, গৃহহীন থাকবে না। কেউ না খেয়ে থাকবে না। কেউ বিনা চিকিৎসায় কষ্ট পাবে না।

আজ ঢাকার সোনারগাঁও হোটেলের সুরমা হলে মাস্তুল ফাউন্ডেশন আয়োজিত যাকাত কনফারেন্স-২০২৫ অনুষ্ঠানে তিনি এসব বলেন। অন্যদের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন মুফতী গাজী সানাউল্লাহ রাহমানী, প্রফেসর ড. আতাউর রহমান মিয়াজী, প্রফেসর ডা. রায়হান হোসেন, ওয়াইস খান নূর সোহেল, মুফতি সাইফুল ইসলাম, এস ডি খান, শেখ মাসুম বিল্লাহ বিন রেজা, প্রফেসর ড. রায়হান হোসেন, শেখ আলী হাসান তৈয়ব, মাওলানা আবদুল কাহার সিদ্দিকী।

কাদের গনি চৌধুরী বলেন, যাকাতের অন্যতম গুরুত্ব হলো অর্থনৈতিক ভারসাম্য রক্ষা করা। সমাজের কেউ সম্পদের পাহাড় গড়বে, সুউচ্চ ইমারতে বসবাস করবে, বিলাসবহুল জীবনযাপন করবে, বারে গিয়ে ফুর্তি করবে, আর কেউ অনাহারে, অর্ধাহারে দিন কাটাবে, ডাস্টবিনে খাবার কুড়াবে, রাস্তায় রাস্তায় কাগজ খুঁজবে, সংসার চালাতে কিডনি কিংবা সন্তান বিক্রি করবে এমন বিধান ইসলামে নেই। সকল শ্রেণির নাগরিকের মধ্যে অর্থনৈতিক ভারসাম্য রক্ষার জন্য ইসলাম ধনীদের উপর যাকাত ফরজ করেছে।

তিনি বলেন, সাধারণত মানুষের অর্থের প্রতি লিপ্সা থাকে। যে কৃপণ স্বভাবের হয়, সে নিজের কষ্টে উপার্জিত অর্থ নিঃস্বার্থভাবে কাউকে দিতে চায় না। তাই দয়াময় আল্লাহ তায়ালা সম্পদশালী ব্যক্তিদের মনকে সম্পদের লিপ্সা, লোভ, কৃপণতা, স্বার্থপরতা প্রভৃতি দোষ থেকে মুক্ত ও পবিত্র রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি মানুষের মনকে দয়া-মায়া, স্নেহ, মমতা ও ভালোবাসা ইত্যাদি মানবিক গুণসম্পন্ন করে তোলার জন্য তাদের উপর যাকাত ফরজ করে দিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, আমাদের মনে রাখতে হবে সম্পদের প্রকৃত মালিক আল্লাহ তায়ালা। মানুষের নিকট তা আমানতস্বরূপ। মানুষ শ্রম ও মেধার দ্বারা সম্পদ অর্জন করবে এবং প্রয়োজন মোতাবেক সম্পদ খরচ করবে। কিন্তু সম্পদ জমা করে রাখা বা কেবল নিজের ভোগবিলাসের জন্য খরচ করা ইসলাম অনুমোদন করে না। কারণ ধনীদের সম্পদে দরিদ্রের অধিকার আছে, তা অবশ্যই আদায় করতে হবে। গরিবের অধিকার আদায় করলে মালিক দায়মুক্ত হবে, সম্পদ পবিত্র হবে; অন্যথায় সম্পদ হালাল হবে না। ইসলামি অর্থনীতিতে পুঁজিবাদ সমর্থন করা হয় না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights