যাত্রাবাড়ীতে ফ্লাইওভারের ওপর মিলল প্রাইভেটকার চালকের মরদেহ
ঢামেক প্রতিনিধি
রাজধানীতে নিখোঁজের পরদিন যাত্রাবাড়ীতে ফ্লাইওভারের ওপর থেকে সোহেল মিয়া (৩৮) নামে এক প্রাইভেটকার চালকের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে যাত্রাবাড়ী থানার পুলিশ।
সত্যতা নিশ্চিত করে পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আমির হোসেন বলেন, ফ্লাইওভারে কর্মরত সিকিউরিটি গার্ডদের মাধ্যমে সংবাদ পেয়ে শুক্রবার (১ নভেম্বর) সকাল ৬টার দিকে ফ্লাইওভারের উপর থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মৃতের স্ত্রী শরমীন সুলতানার মাধ্যমে পরিচয় নির্ণয়ের পর বাকি আইনি প্রক্রিয়া শেষে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহটি ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, তার মাথায় কাটা জখম, কপালে-ডান কাঁধে ক্ষত চিহ্ন, নাক থেঁতলানো জখমসহ একাধিক আঘাত চিহ্ন পাওয়া গেছে।
তিনি বলেন, মৃতের স্ত্রী নিখোঁজের পর জিডি করেছিলেন সবুজবাগ থানায়। পুরো বিষয়টি তদন্তের পর ও ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর প্রকৃত কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।
মৃতের স্ত্রী শারমিন সুলতানা বলেন, আমার স্বামী প্রাইভেটকার চালক ছিলেন। আমাদের নিজেদেরই গাড়ি। বৃহস্পতিবার বিকালে গাড়িটির কাজ করার জন্য সবুজবাগের বাসাবো ঝিলপাড় এলাকায় গ্যারেজে যান। বিকাল ৪টা পর্যন্ত তার সাথে কথা হয়। এরপর থেকে তাকে আর মোবাইলে পাওয়া যায়নি। পরে সেখানে মিস্ত্রি রুবেলের সাথে কথা হয়। সে জানায় তিনি চলে গেছেন। কিন্তু সে বাসায় আসেনি। গাড়িটি গ্যারেজে রয়েছে। পরে গ্যারেজে গিয়ে রুবেল এর সাথে কথা হয়। তার আচরণ সন্দেহজনক হওয়ায় আমি বলি বিষয়টি নিয়ে থানায় জিডি করবো। তখন তিনি প্রতিউত্তরে বলেন, জিডির দরকার কেন, প্রয়োজন হলে আমি করবো। বিষয়টি সবাইকে জানাচ্ছি কেন। এসব নিয়ে তার সাথে তর্কাতর্কি হয়। পরে রাতেই সবুজবাগ থানায় জিডি করি। ড্রাইভারদের ফেসবুক গ্রুপ গুলোতে তার নিখোঁজের সংবাদ দেয়া হয়।
জিডির পর পুলিশ ওই গ্যারেজে গিয়েছেন। সেখানে তল্লাশি করেছেন। সেখানে তাকে পাওয়া না গেলেও সে গ্যারেজে কিছু রক্তের চিহ্ন দেখা গেছে। তার ব্যবহৃত স্যান্ডেল ও ঘড়ি পাওয়া গেছে। তখন রুবেলের প্রতি সন্দেহ আরও বেড়ে যায়। এরই মধ্যে রুবেল তার মোবাইল বন্ধ করে রেখেছে। তাকে আর পাওয়া যায়নি।
আজ সকালে ড্রাইভারদের ওই গ্রুপের মাধ্যমে সংবাদ পাই ধোলাইপাড় ফ্লাইওভারের ওপরে একটি মরদেহ পাওয়া গেছে। পরে সেখানে গিয়ে দেখতে পাই, সেটিই আমার স্বামী সোহেলের মরদেহ।
তিনি বলেন, এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। তিনি ধারণা করছেন, তাকে গ্যারেজে আহত করা হয়, পরে মারা যাওয়ায় উক্ত স্থানে ফেলে দিয়ে আসে। এখানে কয়েকজন মিলে ঘটনাটি ঘটিয়েছে।
শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলার আকনকান্দি গ্রামের মৃত মোকলেছুর রহমানের ছেলে সোহেল মিয়া। বর্তমানে সবুজবাগের কদমতলা এলাকায় ভাড়াবাসায় পরিবারের সাথে থাকতেন। এক ছেলে এক মেয়ের জনক ছিলেন তিনি।