রুটে রুটে চলছে ভাড়া নৈরাজ্য
ইমরান এমি, চট্টগ্রাম
চট্টগ্রামে ভাড়া নিয়ে চলছে নৈরাজ্য। চালক-হেলপাররা ইচ্ছামতো ভাড়া আদায় করছেন। সরকারিভাবে ভাড়া নির্ধারণ করে দেওয়া হলেও তা কার্যকর হচ্ছে না। যার কারণে চালক ও যাত্রীদের সঙ্গে লেগেই থাকে ঝগড়াবিবাদ ও মারামারি। বাড়তি ভাড়া আদায় করলেও নির্দিষ্ট গন্তব্যে যায় না বেশির ভাগ গণপরিবহন। ফলে আরেক দফা ভাড়া দিয়ে গন্তব্যে পৌঁছতে হয় যাত্রীদের। বিআরটিএ অভিযান চালালেও থামছে না চালকদের ভাড়া নৈরাজ্যের খেলা।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক উত্তর জোনের উপ-কমিশনার জয়নুল আবেদিন বলেন, বাড়তি ভাড়া নিয়ে বিআরটিএ কাজ করে। কোনো বাস যদি নির্দিষ্ট রুট কমপ্লিট না করে সেক্ষেত্রে তা আমাদের ট্রাফিকের নজরে এলে আমরা আটক করে আইনি ব্যবস্থা নিতে পারি। এক্ষেত্রে বিআরটিএ যদি নিয়মিত ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে অভিযান পরিচালনা করে তাহলে এ সমস্যা থাকবে না। বিআরটিএ চট্টগ্রাম নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কামরুল হাসান বলেন, আমরা নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করছি। নির্দিষ্ট গন্তব্যে না যাওয়া, বাড়তি ভাড়া আদায় এমন অভিযোগে গাড়ি আটক করা হয়। এ ছাড়াও চালকদের ভ্রাম্যমাণ আদালতে জেল-জরিমানা করা হয়।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পরিবহন মালিক গ্রুপের সভাপতি বেলায়েত হোসেন বলেন, অনেক চালক ও হেলপার আছে তারা সরকার নির্ধারিত ভাড়ার তালিকা টাঙিয়ে রাখে না। আবার অনেকে আছে সরকার নির্ধারিত ভাড়া সম্পর্কে জানে না। কারণ তারা তো রুট পারমিট অনুযায়ী গাড়ি চালাচ্ছে না, তারা একটি রুটকে দুই তিনটি রুট করে ইচ্ছামতো গাড়ি চালাচ্ছে। নির্দিষ্ট গন্তব্যে না যাওয়ার কারণে তারা যেমন ইচ্ছা সেভাবে ভাড়া নিচ্ছে।
তাদের পেছনে ইন্ধন জোগাচ্ছে ট্রাফিক পুলিশের কিছু অসাধু কর্মকর্তা। যার কারণে চালক-হেলপার বেপরোয়াভাবে ভাড়া আদায় করছে এবং রুট পারমিট অনুযায়ী গাড়ি চালাচ্ছে না। আরটিসি মিটিংয়ে পুলিশ কমিশনারকে বিষয়টি আমরা জানিয়েছি, তিনি এ সমস্যা সমাধানে আশ্বাস দিয়েছেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, নগরের বহদ্দারহাট থেকে চকবাজারে সিএনজিচালিত বাসে সরকার নির্ধারিত ভাড়া ৭ টাকা। কিন্তু আদায় করা হচ্ছে ১০ টাকা থেকে আরও বেশি। সিএনজিচালিত মিনিবাসের ভাড়া ৫ টাকা হলেও আদায় করা হচ্ছে ১০ টাকা। একইভাবে চকবাজার থেকে জামালখান ভাড়া ৫ টাকা হলেও ডিজেলচালিত টেম্পু নিচ্ছে ১০ টাকা। এভাবে নগরের প্রতিটি রুটে বাড়তি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। কিছু অসাধু ট্রাফিক পুলিশকে ম্যানেজ করে চালকরা এ অরাজকতা করার কারণে কোনোভাবেই থামানো যাচ্ছে না তাদের। গ্যাসচালিত গণপরিবহনে সবুজ ও ডিজেলচালিত পরিবহনে লাল চিহ্নিত স্টিকার সাঁটিয়ে দেওয়ার নিয়ম করেছে সরকার। কিন্তু হাতে গোনা কয়েকটি গণপরিবহনে এ চিহ্ন দেওয়া হলেও বেশির ভাগ বাস তা বাস্তবায়ন করেনি। যার কারণে এসব গণপরিবহনকে আলাদাভাবে চেনার উপায় নেই। চালক ও হেলপাররা গ্যাসচালিত গাড়িতে নিচ্ছেন ডিজেলচালিত পরিবহনের ভাড়া।