লক্ষ্মীপুরে হত্যার দায়ে ২ জনের যাবজ্জীবন
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি:
লক্ষ্মীপুরে রিয়াজ হোসেন নামের এক কাঠমিস্ত্রিকে হাত-পা বেঁধে শ্বাসরোধ করে হত্যার দায়ে তার সহকর্মী মো. কাউসার হোসেন ও রাকিব হোসেনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একইসঙ্গে তাদের ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও ১ বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রহিবুল ইসলাম এ রায় দেন। রায়ের সময় দুই আসামী আদালতে উপস্থিত ছিল। তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
দণ্ডপ্রাপ্ত কাউসার সদর উপজেলার মান্দারী ইউনিয়নের যাদৈয়া গ্রামের আবু তাহেরের ছেলে এবং রাকিব তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়নের বিনোদধর্মপুর গ্রামের মৃত রুহুল আমিনের ছেলে। ভিকটিম রিয়াজ হোসেন দত্তপাড়া ইউনিয়নের করইতোলা গ্রামের মৃত খোকনের ছেলে। এর আগে একই বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি রাতে রিয়াজকে হত্যা করা হয়।
আদালত সূত্রে জানা যায়, তারা দুইজন একই সাথে ফার্নিসারের নকশার কাজ করতেন। বিভিন্ন জায়গায় রিয়াজ কাজ কন্ট্রাক নিলেও কাউসারকে কম টাকা দিত। এছাড়া কাউসারের স্ত্রীর সাথে রিয়াজ বিভিন্ন সময়ে মুঠোফোনে কথা বলতেন। এতে রিয়াজের প্রতি সন্দেহ হয় কাউসারের। কাউসার তার বন্ধু রিয়াজের উপর প্রতিশোধ নেওয়ার পরিকল্পনা করে। তারা দুইজন একসাথে মান্দারী বাজারের দিঘলী সড়কের মুখে একটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে সেখানে থাকতেন। ২০২৩ সালে ১৪ ফেব্রুয়ারী রাতে ওই বাসায় রিয়াজকে জুসের সাথে চেতনানাশক ওষুধ খাইয়ে দিয়ে অজ্ঞাত করে হাত-পা বাঁধে কাউসার। রিয়াজের চেতনা ফিরে আসলে সে হাত-পা বাঁধার কারণ জানতে চাইলে কাউসার তার মুখে গামছা গুঁজে দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে। ওই কক্ষে মৃতদেহ রেখে পরদিন কাউসার তার আত্মীয় রাকিবকে সাথে করে চট্রগ্রামে চলে যায়। সেখান থেকে রিয়াজের নাম্বার থেকে মুক্তিপণ দাবি করে কাউসার। এরপর র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হয় কাউসার ও রাকিব। পরে একই বছরে ১ এপ্রিল মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও চন্দ্রগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবদুর রহিম দণ্ডপ্রাপ্তদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। দীর্ঘ শুনানি ও সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত এ মামলার রায় দেন।
জেলা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) জসিম উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেন।