শরীয়তপুর-চাঁদপুর ফেরিঘাটের বছরে রাজস্ব ঘাটতি ২৪ কোটি টাকা
রোকনুজ্জামান পারভেজ, শরীয়তপুর:
শরীয়তপুর-চাঁদপুর ফেরিঘাটের মাসে রাজস্ব ঘাটতি দুই কোটি টাকা। শরীয়তপুর চাঁদপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের রাস্তার বেহাল দশা বিভিন্ন স্থানে খানাখন্দ ও গেলো বছর ভয়াবহ বন্যার করণে লক্ষ্মীপুর-ফেনী মহাসড়কের খানাখন্দের কারণে যানবাহনের সংখ্যা এ রুটে কমে যাওয়ায় বিআইডব্লিউটিসির শরীয়তপুর চাদপুর ফেরি সার্ভিসে প্রতি মাসে লোকশানের পরিমাণ ২ কোটি টাকারো উপরে। প্রতি বছরে লোকসানের সংখ্যা ২৪ কোটি টাকারো বেশি।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্পোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) সূত্রে জানা যায়, দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার সাথে চট্টগ্রাম ও মংলার দূরত্ব কম হওয়ায় এ সড়কটি যাত্রী ও পণ্যবাহী যানবাহনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। গত ২৫ জুন পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর থেকেই এ রুটে যান চলাচল কমে গিয়েছে। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পূর্বে শরীয়তপুর চাঁদপুর ফেরি সার্ভিস দিয়েছে দৈনিক ছোট-বড় ৩৫০ থেকে ৪০০ গাড়ি পারাপার হতো। এর বিপরীতে এ নৌ রুটে প্রতিদিন ছোট বড় ছয়টি ফেরি নিয়মিত চলাচল করতো। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পূর্বে এ নৌরুটে সরকার প্রতিমাসে চার কোটি ২০ লক্ষ টাকা থেকে ৫ কোটি টাকা পর্যন্ত রাজস্ব আদায় হতো। খুলনা ঢাকা-চট্টগ্রাম এই মহাসড়ক থেকে খুলনা-চাঁদপুর-চট্টগ্রাম এর দূরত্ব ১৩০ কিলোমিটার কম থাকা সত্ত্বেও শুধুমাত্র শরীয়তপুর- চাঁদপুর মহাসড়কটি প্রশস্ত কম এবং রাস্তার বেহালদশার কারণে দিন দিন উক্ত নৌরুট যানবাহনের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। খুলনা, বেনাপোল এবং ভোমরা স্থল বন্দরের যাত্রী ও মালামাল সমূহ বিকল্প পথ হিসেবে পদ্মা সেতু ব্যবহার করে চট্টগ্রাম যাতায়াত করছে । এতে করে যাত্রীদের অর্থ এবং সময় দুটোই বেশি খরচ হচ্ছে। শরীয়তপুর -চাঁদপুর নৌরুটে বর্তমানে ছয়টি ফেরির মধ্যে প্রতিদিন রোস্টার মাফিক তিনটি ফেরি চলাচল করছে। বর্তমানে উক্ত রোড দিয়েছে প্রতি দিন ছোট বড় ১০০ থেকে ১২০ টি যানবাহন পারাপার হয়ে থাকে। বর্তমানে উক্ত নৌরুটে প্রতিমাসে সরকার রাজস্ব পাচ্ছে প্রায় দুই কোটি থেকে দুই কোটি ২০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত।
কাঁচা মালের পরিবহনের একজন চালক মিলন হোসেন বলেন, আমাদের চট্টগ্রাম থেকে খুলনা যেতে সহজ রাস্তা এটি তবে রাস্তার বেহাল দশার কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে৷ সময় বেশি লাগছে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্পোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) নরসিংহপুর ফেরিঘাটের সহ-ব্যবস্থাপক মো. ইকবাল হোসেন বলেন, শরীয়তপুর- চাঁদপুর মহাসড়কটি প্রশস্ত কম এবং রাস্তার বেহালদশার ও গত বন্যার কারণে রাস্তার ক্ষতি হওয়ার কারণে দিন দিন এ নৌরুটে যানবাহনের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। খুলনা, বেনাপোল এবং ভোমরা স্থল বন্দরের যাত্রী ও মালামাল সমূহ বিকল্প পথ হিসেবে পদ্মা সেতু ব্যবহার করে চট্টগ্রাম যাতায়াত করছে। আমাদের এ ঘাটে পদ্মাসেতু উদ্বোধনের আগে চার কোটি ২০ লক্ষ টাকা থেকে ৫ কোটি টাকা রাজস্ব আয় হত। বর্তমানে উক্ত নৌরুটে প্রতিমাসে সরকার রাজস্ব পাচ্ছে প্রায় দুই কোটি থেকে দুই কোটি ২০ লক্ষ টাকা। শরীয়তপুর মনোহর মোড় থেকে ফেরিঘাট পর্যন্ত রাস্তাটি নির্মাণ/ মেরামত করা হলে সরকারের রাজস্ব বৃদ্ধি পাবে সেই সাথে সাধারণ যাত্রীদের যাতায়াতের কষ্ট লাগব হবে বলে মনে করছি।
শরীয়তপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ নাবিল হোসেন বলেন, চলতি বছরের ডিসেম্বরে মেয়াদ শেষ হতে যাওয়ায় অনিশ্চয়তায় প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। তবে, ভূমি অধিগ্রহণে বাড়তি বরাদ্দ ও টেন্ডার-রিটেন্ডারের কাজ শেষ করে বাস্তবায়ন করা হবে।