শীত উপেক্ষা করে বোরো আবাদে ব্যস্ত কৃষকরা

নেত্রকোনা প্রতিনিধি
সারা দেশের ন্যায় কনকনে শীতে বিপর্যস্ত নেত্রকোনার জনজীবন। এই শীতকে উপেক্ষা করেই বোরো আবাদে মাঠে নেমেছেন কৃষকরা। তীব্র শীতের কারণে আবাদ কিছুটা পিছিয়ে যাওয়ায় নাওয়া-খাওয়া বাদ দিয়ে তারা মাঠে নেমেছেন। এবার সব কিছুর দাম বাড়তি থাকায় কৃষি উপকরণের মূল্য বেড়েছে। ফলে বিপাকে চাষিরা। তার উপর শীতে কয়েক দফায় নষ্ট হয়েছে চারা। বিদুৎ বিভ্রাটে হচ্ছে সেচের সঙ্কট। নানা প্রতিকূল পরিবেশেই নিজেদের খরচ কমাতে শ্রমিকদের সাথে নিজেরাও কাজ করছেন জমিতে।

হাওরাঞ্চলে বছরের একমাত্র বোরো ফসল আবাদে ব্যস্ত সময় কাটছে কৃষকদের। এ ছাড়াও নেত্রকোনা জেলার সর্বত্র এখন চলছে জমিতে মই দেওয়া, হালসহ চারা রোপণ। বিভিন্ন উপজেলার তৃণমূল চাষিদের স্বপ্ন বুননে শীতের তীব্রতাকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে বৃদ্ধ থেকে মধ্য বয়সী এমনকি যুবকরাও মাঠে নেমেছেন। গেল কয়েক বছর ধরে আগাম জাতের ২৮ ধান নষ্ট হওয়ায় চরম ক্ষতির মুখে চাষিরা। এবার নতুন উদ্ভাবিত বিভিন্ন জাতের ধান রোপণ করছেন তারা।

তবে চারা, সেচ এবং হালসহ শ্রমিক মজুরি দিতে দিতেই অনেকে নাজেহাল। তারপরও সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শ্রমিকদের সাথে সাথে নিজেরা চারা রোপণ কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। ঠাণ্ডায় পৌষ মাস পেরিয়ে গেছে। যে কারণে নানা সঙ্কট নিয়েই দ্রুত জমিতে চারা লাগাচ্ছেন বলে জানালেন সাতবেরিকান্দা গ্রামের সোহরাব উদ্দিন।
জমিতে কেউ হাল চাষ করছেন, কেউবা দিচ্ছেন সেচ। এমন কর্মব্যস্ত রুবেল মিয়া, হাবিল মিয়া বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও কৃষি উপকরণের মূল্য বৃদ্ধিতে চাষাবাদে হিমশিম খাচ্ছেন তারা। তাদের দাবি, দাম কমিয়ে সরকার যেন সহায়তা করে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মোহাম্মদ নুরুজ্জামান বলেন, ব্রি ২৮ ধানের জাত পুরনো হয়ে গেছে সেটি কম লাগাতে উদ্বুদ্ধ করেছেন। ভালো জাতের দ্রুত ফলনশীল এবং কম সময়ে এসব পরীক্ষিত জাত এবার বেশি চাষ হচ্ছে। যে কারণে ফসল ভালো হবে। পোকা এবং কোনো ধরনের দুর্যোগ না হলে বাম্পার ফলন হবে আগামীতে।

তিনি জানান, এ বছর নেত্রকোনায় বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ৮৫ হাজার ২৬০ হেক্টর। তার মাঝে শুধুমাত্র হাওরাঞ্চলেই রয়েছে ৪০ হাজার ৯৭০ হেক্টর। যা গত বছরের তুলনায় ৫২৫ হেক্টর বেশি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights