শেখ হাসিনা তার বাবার মতো বাকশাল করতে চেয়েছিলেন: সাকি

অনলাইন ডেস্ক
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাবার মতো বাকশাল করতে চেয়েছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি।

তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালের বাকশাল ছিল ১৯৭২-এর সংবিধানের ক্ষমতা কাঠামোর ধারাবাহিকতা।
যেমনটা শেখ হাসিনা বাকশাল ২.০ তৈরি করতে গিয়েছিলেন ওই একই সংবিধানে। তিনি ভেবেছিলেন গণতন্ত্রের মোড়কে বাকশাল চলবে। সেটাই তিনি কায়েম করতে চেয়েছিলেন।

শনিবার দুপুরে রাজশাহী মহানগরীর সাহেববাজার বড় মসজিদ চত্বরে আয়োজিত এক গণসংলাপে বক্তব্য দিতে গিয়ে সাকি এ মন্তব্য করেন।

গণসংহতি আন্দোলনের রাজশাহী জেলা শাখার উদ্যোগে ‘রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তরে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে’ এ গণসংলাপের আয়োজন করা হয়েছিল। এতে প্রধান বক্তা ছিলেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি। গণসংলাপে সভাপতিত্ব করেন গণসংহতি আন্দোলনের রাজশাহী জেলার আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মুরাদ মোর্শেদ। এতে বিশেষ বক্তা ছিলেন কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য জুলহাসনাইন বাবু। জেলার সদস্য সচিব জুয়েল রানা এ গণসংলাপ সঞ্চালনা করেন। গণসংলাপে রাজশাহীর শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী, উদ্যোক্তাসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন।

জোনায়েদ সাকি বলেন, ১৯৭২ সালে যে সংবিধান করা হয়েছে, সেখানে ১৯৭১ সালের মানুষের যে আকাঙ্ক্ষা তাকে অস্বীকার করা হয়েছে। ওই সংবিধানে প্রধানমন্ত্রী সংবিধানেরও ঊর্ধ্বে। তাই সমস্ত রাষ্ট্র তিনি তার পকেটের মধ্যে ঢুকিয়ে ফেলতে পারেন। অনেকে বলেন, ১৯৭২-এর সংবিধান ঠিক আছে, ১৯৭৫-এর বাকশালটা করা ঠিক হয়নি। কোনো কোনো বামপন্থিরাও বলেন। তবে আমরা বলি, এ সংবিধান আমরা চাই না, যা কোনো শাসককে স্বৈরাশাসকে পরিণত করে।

তিনি আরও বলেন, নতুন সংবিধানে স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করতে হবে। বিচার বিভাগকে আলাদা করতে হবে নির্বাহী বিভাগ থেকে। সরকার যেন বিচার বিভাগের ওপর কোনো রকম খবরদারি করতে না পারে। গণমাধ্যম স্বাধীন করতে হবে এমনভাবে, যাতে আদালতের মতোই জনগণের আশ্রয় হয়ে উঠতে পারে গণমাধ্যম।

সাকি বলেন, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো সংস্কার করতে হবে। আইনের সংস্কার করতে হবে। আর তার ভিত্তিতে এমন নির্বাচন ব্যবস্থা আয়োজন করতে হবে, যাতে বাংলাদেশে আর কেউ মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিতে না পারে। নতুন নির্বাচন কমিশন হয়েছে। আপনারা (নির্বাচন কমিশন) এমন দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন, যাতে আর কেউ নির্বাচন কমিশনকে ব্যবহার করে মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিতে না পারে। বৈষম্যহীন রাষ্ট্র যদি পেতে হয়, তাহলে আমাদের একটা নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত করতে হবে। তার ভিত্তি হবে গণতান্ত্রিক সংবিধান। এ ফ্যাসিস্ট সংবিধান নয়, হতে হবে একটা গণতান্ত্রিক সংবিধান।

এ অভ্যুত্থান দাবি করে, বাংলাদেশে নতুন রাজনৈতিক শক্তি গড়ে উঠুক। কাজেই আগামী নির্বাচনের আগেই আমাদের জনগণের রাজনৈতিক শক্তি গড়ে তুলতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights