শ্রমিকদের কর্মবিরতিতে রাজশাহী রেশম কারখানার উৎপাদন বন্ধ
এক সপ্তাহ থেকে কর্মবিরত পালন করেছেন রাজশাহী রেশম কারখানার শ্রমিকরা।
সোমবার বেলা ১১টার দিকে রেশম কারখানা শো-রুমের প্রধান ফটকের সামনে মাটিতে বসে কর্মবিরতি পালন করছেন শ্রমিকরা। শ্রমিকদের অভিযোগ, সপ্তাহব্যাপী কর্মবিরতি পালন করলেও রেশম বোর্ডের কোনও কর্মকর্তা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। শ্রমিকদের বকেয়া বেতনের বিষয়েও তারা কথা বলেননি।
এর আগে গত ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে ৬ মাসের বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করে রাজশাহী রেশম কারখানার শ্রমিকরা। সেই দিন থেকে রেশম কারখানা শো-রুমের প্রধান ফটকের সামনে বসে কর্মবিরতি পালন করছেন তারা।
শ্রমিক শামসুল আলম জানান, এই শ্রমিকরা মিলে প্রতিদিন ১০০ থেকে ১১০ গজ কাপড় তৈরি করে। তারা কাজ করলে এই সাতদিনে ৭৭০ গজ কাপড় তৈরি হতো। কিন্তু কর্মবিরতির কারণে এই কাপড় তৈরি হয়নি। এই কাপড় বিভিন্ন প্রক্রিয়া শেষে শো-রুমে বিক্রি হয় ৭৫০ টাকা গজ হিসেবে। কারখানা শ্রমিকদের কর্মবিরতির কারণে এক সপ্তাহে প্রায় পৌনে এক লাখ টাকার কাপড় উৎপাদন হয় রেশম বোর্ডের কারখানায়।
কারখানার শ্রমিক মো. লালন বলেন, গত ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে ছয় মাসের বেতনের দাবিতে কর্মবিরতি পালন করছি। এই কয়দিন কাজ সম্পূর্ণভাবে বন্ধ আছে। কর্মসূচি চলাকালে প্রথম দিন খাতায় স্বাক্ষর করতে দেওয়া হয়েছিল। তারপর থেকে আর হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করতে দেওয়া হয়নি। আমাদের হাজিরা তুলছে না কর্তৃপক্ষ। তারপরও কর্মবিরতি অব্যাহত রয়েছে। আমাদের যতদিন বেতন না দেবে, আমরা কাজে যোগদান করব না। একইভাবে রেশম বোর্ড, বোর্ডের গবেষণা ও কারখানার শ্রমিকদের বেতন বন্ধ আছে। তারা আলাদাভাবে কর্মসূচি পালন করেছেন।
তিনি বলেন, “আমাদের বেতন দেওয়া হয় মাত্র ৩০০ টাকা। কাজ করলে টাকা পাই, না করলে পাই না। কর্মসূচি পালন করছি, বেতনের দাবিতে। প্রথমদিন ছাড়া হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করতে দেয়নি।”
কারখানার শ্রমিক খাইরুল ইসলাম বলেন, “শুধু কর্মচারীদের বেতন বাকি আছে। কর্মকর্তাদের বেতন হচ্ছে ঠিক মতো। তারা (কর্মকর্তা) আমাদের কাছে আসছেন না, বসছেন না। আমাদের বিষয়ে উনাদের (কর্তৃপক্ষ) কোনও মাথা ব্যথাই নেই। তারা আমাদের সাথে কোনও ধরনের কথা বলছেন না বা আশ্বাস দিচ্ছেন না। এমন অবস্থায় আমরা কীভাবে চলব। বাড়ি ভাড়া বাকি, দোকানে বাকি পড়েছে। তারা বাকি দিতে চাচ্ছে না। ছেলে-মেয়ে নিয়ে অনেক কষ্টে আছি।”
রেশম সম্প্রসারণ কার্যালয়ের আঞ্চলিক উপপরিচালক কাজী মাসুদ রেজা বলেন, “শ্রমিকদের বেতনের বিষয়ে আমরাও চেষ্টা করছি। আশা করা যাচ্ছে দ্রুতই তাদের বেতন হয়ে যাবে।”