সিজিপিএ পদ্ধতি বাতিলের দাবি মেডিকেল শিক্ষার্থীদের

অনলাইন ডেস্ক
সব মেডিকেল কলেজে সিজিপিএ পদ্ধতি বাতিল এবং ক্যারিঅন পদ্ধতি বহাল রাখার দাবিতে আন্দোলন করছেন মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা। ১১ জানুয়ারির মধ্যে দাবি না মানা হলে কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।

রবিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এ আন্দোলনে ঢাকা মেডিকেল কলেজ, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজসহ দেশের বেশিরভাগ মেডিকেল কলেজের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা যোগ দেন।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বলেন, ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষ থেকে মেডিকেল শিক্ষা ব্যবস্থায় বিএমডিসি কর্তৃক নতুন কারিকুলাম প্রণয়ন করা হয়েছে। নতুন এ কারিকুলামে সিজিপিএ পদ্ধতি চালু এবং ক্যারিঅন পদ্ধতি বাতিল করা হয়েছে। কিন্তু আগে চালু থাকা ক্যারিঅন পদ্ধতি বাতিল এবং অবকাঠামোগত পর্যাপ্ত পরিবর্তন না এনে সিজিপিএ পদ্ধতি চালু করা বাংলাদেশের মেডিকেল শিক্ষাব্যবস্থায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল নোমান গণমাধ্যমকে বলেন, মেডিকেল শিক্ষা ব্যবস্থায় পারস্পরিক সহযোগিতা ও সহমর্মিতা গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু সিজিপিএ পদ্ধতির আবির্ভাব ঘটলে এই সহযোগিতা- সহমর্মিতার লোপ ঘটবে।

নোমান বলেন, একজন শিক্ষার্থীর ভালো বা খারাপ ডাক্তার হওয়া নির্ভর করে তার দক্ষতা ও বুদ্ধিমত্তার ওপর। এ অবস্থায় সিজিপিএ পদ্ধতি চালু করে ডাক্তারদের দক্ষতার মাপকাঠি নির্ণয় করা শিক্ষার্থীদের অসুস্থ প্রতিযোগিতার দিকে ঠেলে দেবে। যে শিক্ষার্থী ক্লাসে ভালো তিনি প্যাকটিক্যাল সার্জারিতে অদক্ষও হতে পারেন। সুতরাং শুধুমাত্র সিজিপিএ দিয়ে বিচার করার পদ্ধতি বন্ধ করা উচিত।

স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের এক শিক্ষার্থী বলেন, কারিকুলামের পরিবর্তন যদি আনতেই হয় তাহলে সম্পূর্ণরূপে পরিবর্তন আনতে হবে। কিছু পদ্ধতি পুরাতন রেখে কিছু পদ্ধতি নতুন সংযোজন হলে আমাদের স্বাভাবিক জীবন ব্যবস্থাকে হুমকির মুখে ফেলবে।

তিনি বলেন, যদি সিজিপিএ পদ্ধতি চালু করা হয় তাহলে সেমিস্টার চালু হোক এবং পরীক্ষায় পর্যাপ্ত অবকাঠামোগত পরিবর্তন করা হোক। যেমন কেন্দ্রীয় ভাইভা পদ্ধতির আবির্ভাব ঘটানো থেকে শুরু করে পক্ষপাতিত্ব না হওয়া নিশ্চিত করতে যা যা পরিবর্তন প্রয়োজন সেগুলো সমন্বয় করা হোক। এটা নিশ্চিত করলে না পারলে ক্যারিঅন পদ্ধতি পুনর্বহাল রাখা হোক।

সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী মাহমুদুল হাসান তুষার গণমাধ্যমকে বলেন, আমাদের দেশের দীর্ঘতম গ্রাজুয়েশন কোর্স এমবিবিএস। ইন্টার্নশিপসহ যার স্থায়িত্ব প্রায় ৬ বছর। কিন্তু নতুন কারিকুলাম অনুযায়ী একজন শিক্ষার্থী দুর্ভাগ্যবশত অকৃতকার্য হলে তাকে বাধ্যতামূলক ছয় মাস বসে থাকা লাগবে। যার ফলে সে ব্যাচ থেকে ছিটকে পড়বে। এভাবে ৬ বছরের ডিগ্রি নিতে কারো ১০ বছরও লাগতে পারে। এতে একদিকে যেমন শিক্ষার্থীদের বিষন্নতায় ফেলবে অপরদিকে কলেজগুলো বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে রূপ নেবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights