সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি ইতিবাচক: এলকপ

সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি দক্ষিণ এশিয়ার প্রেক্ষাপটে ইতিবাচক বলে মন্তব্য করেছে মানবাধিকার সংস্থা এলকপ। সোমবার সংস্থাটির পক্ষ থেকে ২০২২ সালের মানবাধিকার পরিস্থিতির সার্বিক চিত্র তুলে ধরে এ মন্তব্য করা হয়।

এলকপের বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশের জন্ম সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার অর্থাৎ মানবাধিকারের প্রতিশ্রুতি নিয়ে। সেজন্য এই রাষ্ট্রের কাছে নাগরিক সমাজের প্রত্যাশা অনেক বেশি। আর অর্থনৈতিক উন্নয়ন ছাড়া মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। আর যোগাযোগ ব্যবস্থা হল অর্থনৈতিক উন্নয়নের চাবিকাঠি। ২০২২ সালে পদ্মা সেতু উদ্বোধন, মেট্রোরেল উদ্বোধন এবং ১০০টি সেতু উদ্বোধন করার মাধ্যমে বাংলাদেশ এক নবযুগ সূচনা করেছে। সার্বিকভাবে বেড়েছে জীবনযাত্রার মান। বাংলাদেশে শতভাগ বিদ্যুতায়ন ঘটেছে। ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে জ্বালানির বাজার অস্থির হয়ে পড়ায় সাময়িক কিছু সমস্যা হলেও বাংলাদেশ তা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে। তাছাড়া বাংলাদেশ অনেক সফলতার সঙ্গে করোনা অতিমারী মোকাবেলা করতে পেরেছে, যখন অনেক উন্নত রাষ্ট্রও হিমশিম খেয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের রক্তস্নাত বিজয়ের পর হেনরি কিসিঞ্জার বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ি আখ্যায়িত করলেও বাংলাদেশ এখন আর পরনির্ভরশীল নয়। আজ বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। তাছাড়া শ্রীলংকার অর্থনৈতিক সংকটে ভাল প্রতিবেশীর ন্যায় বাংলাদেশ সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। পাশাপাশি রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মানবাধিকার রক্ষায় বাংলাদেশ বরাবরের মত সচেষ্ট ছিল। পূর্বের মত ২০২২ সালেও বৃদ্ধদের ভাতা, গৃহায়ন ইত্যাদি আর্থ-সামাজিক অধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অব্যাহতভাবে কাজ করে গেছে।

বৈষম্যবিরোধী বিল ২০২২ জাতীয় সংসদে উত্থাপিত হয়েছে। এর ফলে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকল নাগরিকের অধিকার সমভাবে রক্ষিত হবে। এলকপ আশা করে, দ্রুতই এই বিলটিকে আইন হিসেবে পাশ করা হবে। দেড়শো বছর পরে এসে ২০২২ সালে সাক্ষ্য আইন ১৮৭২-এর আপত্তিকর ধারা সংশোধন করা হয়েছে। এর ফলে নারী পুরুষের সমতার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ একধাপ এগিয়ে গেল। ধর্মপালনের স্বাধীনতার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের লক্ষ্য সুদূরপ্রসারী। এর আগের কয়েক বছরে দুর্গাপূজার সময়ে মূর্তি ভাঙচুরের মত ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটলেও গতবছর এরকম ঘটনা তুলনামূলকভাবে কম ঘটেছে। বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে সংখ্যালঘু কমিশন গঠনের দাবি করা হয়েছে। এলকপ প্রত্যাশা করে, এ বছর এই কমিশনটি আলোর মুখ দেখবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights