সুবর্ণচরে স্কুল ভবন নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যাবহার, প্রতিবাদে মানববন্ধন
মোঃ ইমাম উদ্দিন সুমন, সুবর্ণচর, নোয়াখালী প্রতিনিধি :
নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার দক্ষিণ চরকাজী মোখলেছ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণে মানহীন ও নিম্নমানের সামগ্রী মজুুদ এবং মজুুদকৃত নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারে বাঁধা দেয়ায় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে হুমকির প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে স্থানীয় এলাকাবাসী।
মঙ্গলবার সকালে উপজেলার দক্ষিণ চরকাজী মোখলেছ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনের সড়কে ঘন্টা ব্যাপি এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, সম্প্রতি দক্ষিণ চরকাজী মোখলেছ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি নতুন ভবন নির্মাণের জন্য টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পূন্ন করে উপজেলা প্রকৌশল কার্যালয়। টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পূন্নের পর ঠিকাদার আলমগীর হোসেন ভবন নির্মাণের জন্য ইট, বালু, রডসহ নির্মাণ সামগ্রী বিদ্যালয়ের মাঠে এনে মজুদ করেন। এতে দেখা যায়, নির্মাণ কাজে ব্যবহারের জন্য আনা ইট ও ইটের খোয়াগুলো অত্যন্ত নিম্নমানের, রড গুলো বাংলা এবং বালুগুলোও লোকাল। এই নিম্নমানের সামগ্রী দেখে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জয়তুন নেছা উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানায়। উর্ধতন কর্তৃপক্ষ কাজের মান নির্ণয় করে নিম্নমানের কাজ যাচাই করে কাজটি বন্ধ করে দেয়।
নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে নির্মাণ কাজ না করতে না পারায় ঠিকাদার আলমগীর হোসেন উত্তেজিত হয়ে প্রধান শিক্ষক জয়তুন নেছাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়ে অকথ্য ভাষায় অশ্লীল গালমন্দ করেন।
মানববন্ধনে বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণে মানহীন ও নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার না করে সঠিক মানসম্পূন্ন সামগ্রী ব্যাবহারের দাবি তোলেন এলাকাবাসী। একই সঙ্গে তারা প্রধান শিক্ষক জয়তুন নেছাকে হুমকির প্রতিবাদ জানান।
দক্ষিণ চরকাজী মোখলেছ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জয়তুন নেছা বলেন, বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণের জন্য ঠিকাদার ইট ও খোয়াসহ যেসব নির্মাণ সামগ্রী এনেছেন, তা অত্যন্ত মানহীন ও নিম্নমানের। গত ১৭ নভেম্বর এই নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে ভবনের কাজ হচ্ছে আমি আমার উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানাই। এতে ঠিকাদার আলমগীর আমাকে অকথ্য ভাষায় অশ্লীল গালমন্দ করে আমাকে দেখা নেওয়ার হুমকি দেন এবং কিভাবে এই বিদ্যালয়ে চাকুরী করি দেখে নেয়ার কথা জানান।
ঠিকাদার আলমগীর হোসেন তার বিরুদ্ধে করা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমরা মাত্র বেজ কেটেছি, এখনো কাজ শুরুই করি নাই। স্কুলের প্রধান শিক্ষক বারণ করার পর আমি কাজ বন্ধ রেখেছি। নির্মাণ সামগ্রীর টেস্ট রিপোর্ট আসলে তার পর কাজ শুরু করবো।
উপজেলা সহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ শাহজালাল বলেন, দক্ষিণ চরকাজী মোখলেছ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবনটি পিডিপি-৪ প্রকল্প থেকে টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। ঠিকাদার বেজ কাটলেও এখনো কাজ শুরু করেননি। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নির্মাণ সামগ্রী নিয়ে আপত্তি জানালে আপাতত কাজটি বন্ধ রাখা হয়। আপত্তির প্রেক্ষিতে নির্মাণ সামগ্রীগুলো টেস্টে পাঠিয়েছি, সেখানে এগুলো মান ঠিক থাকলে কাজ শুরু করা হবে।