স্বাদুপানির মাছের ২৪ শতাংশ বিলুপ্তির ঝুঁকিতে

অনলাইন ডেস্ক
বিশ্বের মোট মাছের প্রায় ১০ শতাংশই বাস করে স্বাদুপানিতে। তবে সামুদ্রিক ও স্থলজ প্রাণীর মতোই স্বাদুপানির মাছের সংখ্যাও ক্রমাগত কমে যাচ্ছে। বর্তমানে মিঠাপানির অনেক মাছ বিলুপ্তির মুখে। বিজ্ঞানীরা ক্রাস্টেসিয়ান পরিবারের কাঁকড়া, ক্রেফিশ, চিংড়ি, ড্রাগনফ্লাই এবং ড্যামসেলফ্লাইয়ের মতো প্রায় ২৩ হাজার ৪৯৬টি প্রজাতির অবস্থা বিশ্লেষণ করেছেন। এই গবেষণায় দেখা গেছে, এসব প্রজাতির ২৪ শতাংশ বিলুপ্তির উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে।

স্বাদুপানির প্রাণীগুলোর হ্রাসের পেছনে রয়েছে নানা হুমকি। পানিদূষণ, নদীতে বাঁধ নির্মাণ, কৃষি ও শিল্পে অতিরিক্ত পানি ব্যবহার এবং আক্রমণাত্মক প্রজাতির দ্রুত বিস্তার এসবের মধ্যে অন্যতম। নেচার জার্নালে প্রকাশিত গবেষণা অনুযায়ী, এসব কারণেই বহু প্রজাতি আজ সংকটে।

আন্তর্জাতিক ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচারের বিজ্ঞানী ক্যাথরিন সায়ার জানিয়েছেন, এরই মধ্যে অনেক প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে গেছে। সুলাওয়েসির মিনি ব্লু বি চিংড়ি, সেশেলস ডুসখাওকার ড্রাগনফ্লাই, ব্রাজিলের আটলান্টিক হেলিকপ্টার ড্যামসেলফ্লাই এবং যুক্তরাষ্ট্রের আরকানসাস ডেইজি বরোয়িং ক্রেফিশ বিলুপ্তির ঝুঁকিতে থাকা প্রাণীর মধ্যে অন্যতম।

গবেষণায় দেখা গেছে, ১৯৭০ সাল থেকে পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি স্বাদুপানির মাছের সংখ্যা কমে গেছে। শুধু মাছই নয়, হুমকির মুখে রয়েছে অন্যান্য স্তন্যপায়ী প্রাণী, পাখি, সরীসৃপ এবং উভচর প্রাণী। গবেষণায় আরও বলা হয়েছে, স্বাদুপানির প্রাণীগোষ্ঠীর মধ্যে ৩০ শতাংশ ক্রাস্টেসিয়ান, প্রায় ২৬ শতাংশ মাছ এবং ১৬ শতাংশ ড্রাগনফ্লাই ও ড্যামসেলফ্লাই বিলুপ্তির শঙ্কায় রয়েছে।

বিশ্বব্যাপী এমন চারটি অঞ্চল চিহ্নিত করা হয়েছে, যেখানে স্বাদুপানির প্রজাতির সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। আফ্রিকার ভিক্টোরিয়া হ্রদ, দক্ষিণ আমেরিকার টিটিকাকা হ্রদ, এবং পশ্চিম ভারতের পাশাপাশি শ্রীলঙ্কার অঞ্চলগুলোতে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মিঠাপানির মাছ পাওয়া যায়। তবে এসব এলাকার অনেক প্রজাতি আজ বিলুপ্তির মুখে।

গবেষণার এ তথ্য মানব জাতির জন্য একটি সতর্কবার্তা। স্বাদুপানির বাস্তুতন্ত্রের সুরক্ষায় অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হলে ভবিষ্যতে প্রাণীজগতের এই মূল্যবান অংশ হারিয়ে যেতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights