রাবি হল কক্ষে ছাত্রীকে আটকে মারধরের হুমকি ছাত্রলীগ নেত্রীদের

রাবি প্রতিনিধি
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আবাসিক হল কক্ষের দরজা লাগিয়ে রোজিনা আক্তার নামের এক ছাত্রীকে মারধরের হুমকির অভিযোগ উঠেছে শাখা ছাত্রলীগের পাঁচ নেত্রীর বিরুদ্ধে।

গত বুধবার বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম রোকেয়া হলের ৩২৩ নম্বর কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে হল গেটে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেত্রীরা হলেন রাবি শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি তামান্না আক্তার তন্বী, রহমতুন্নেছা হল ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফাতেমা আশরাফী ওরফে রিমি, ছাত্রলীগ কর্মী লামিয়া ইসরাত, নওরীন শৈলী ও রিয়া। তারা রাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবুর অনুসারী।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী রোজিনা আক্তার বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী।

এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করেছে হল প্রশাসন।

আজ শুক্রবার বেগম রোকেয়া হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক জয়ন্তী রাণী বসাক বলেন, ‘এ ঘটনায় শিক্ষক দুলাল চন্দ্র কবিরাজকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাদের দ্রুত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।’

ভুক্তভোগী রোজিনা আক্তার বলেন, ‘এ ঘটনায় আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমি প্রশাসনের কাছে সুষ্ঠু বিচার ও নিরাপত্তা চাই।’

জানা গেছে, গত তিন মাস আগে বিশেষ সুপারিশে আবাসিকতা ছাড়াই বেগম রোকেয়া হলের ৩২৩ নম্বর কক্ষে উঠেন ছাত্রলীগ কর্মী লামিয়া ইসরাত। কিন্তু হলে উঠার তিন মাসে মাত্র দুই থেকে তিন দিন তিনি ওই কক্ষে অবস্থান করেন। ছাত্রী হলের প্রচলিত নিয়মানুযায়ী কোনো শিক্ষার্থী নিয়মিত কক্ষে না থাকলে তিনি কক্ষে কোনো অতিথি রাখতে পারেন না। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে নিজের আসনে দুইজন পরীক্ষার্থীকে থাকতে দেন লামিয়া। তবে কক্ষে থাকাকালীন ওই দুই অতিথির সঙ্গে রোজিনা (ভুক্তভোগী) অসদাচরণ করেন বলে লামিয়ার কাছে অভিযোগ জানান তারা (অতিথিরা)।

অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত বুধবার বিকালে ছাত্রলীগ নেত্রী ফাতেমা আশরাফী, নওরীন শৈলী ও রিয়াকে নিয়ে কক্ষে প্রবেশ করেন লামিয়া এবং কক্ষের দরজা বন্ধ করে ভুক্তভোগীকে মারধরের হুমকি দিয়ে শাসাতে থাকেন তারা। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী চিৎকার শুরু করলে আশপাশের কক্ষের কয়েকজন ছাত্রী ঘটনাস্থলে এসে প্রতিবাদ করতে থাকেন। এ সময় ছাত্রলীগ নেত্রীদের সঙ্গে যোগ দেন তামান্না আক্তার তন্বী। তখন শিক্ষার্থীদের ছাত্রলীগ নেতাদের দিয়ে পেটানোর হুমকি দিয়ে কক্ষ ত্যাগ করেন তারা।

এ ঘটনার কিছুক্ষণের মধ্যেই কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতাকর্মী হলে প্রবেশ করেন। তখন আতঙ্কিত হয়ে পড়েন হলের ছাত্রীরা। এতে নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন বলে অভিযোগ আবাসিক ছাত্রীদের। এ ঘটনার পরদিন বৃহস্পতিবার হল গেটে আন্দোলন করেন হলের অর্ধশতাধিক ছাত্রী।

এ ঘটনায় অভিযুক্তদের সঙ্গে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগ করা হলের সাঁড়া দেননি তারা।

রাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবুকে একাধিকবার ফোন দিলেও রিসিভ করেননি। তবে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিব বলেন, ‘ছাত্রলীগের নেত্রীদেরই বরং হেনস্থা করেছে তারা এবং সেটা ধামাচাপা দিতে উল্টো আন্দোলন করেছে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights