ছোট হয়ে আসছে শাহ আমানতের আকাশ

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

দেশের দ্বিতীয় বৃহৎ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর শাহ আমানতের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য নেওয়া হয়েছে মেগা সব প্রকল্প। বৃদ্ধি করা হয়েছে রানওয়ের সক্ষমতা। মেগা প্রকল্পের ফলে দিন দিন বিমানবন্দরের সক্ষমতা বাড়লেও বিপরীত দিকে হাঁটছে বিমান সংস্থাগুলো। একের পর এক আন্তর্জাতিক রুটের ফ্লাইট পরিচালনা সংস্থা শাহ আমানত থেকে নিজেদের গুটিয়ে নিচ্ছে। এ পর্যন্ত ১৩টি বিদেশি এয়ারলাইনসের ফ্লাইট এখান থেকে বিমান পরিচালনা বন্ধ করেছে।

বিমানবন্দরসূত্রে জানা গেছে, শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে ১৯টি বিমান সংস্থা ফ্লাইট পরিচালনা করলেও বর্তমানে তা নেমে হয়েছে ৬টি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বন্ধ হয়ে গেছে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক রুটও। বন্ধ হয়ে যাওয়া বিমান সংস্থাগুলোর মধ্যে রয়েছে থাই এয়ার, থাই স্মাইল এয়ার, কুয়েত এয়ার, ফুকেট এয়ার, মালিন্দো এয়ার, রোটানা এয়ার, হিমালয়ান এয়ার, রাস আল কাইমা (আরএকে) এয়ার, টাইগার এয়ারওয়েজ, সিল্ক এয়ার, ভারতভিত্তিক স্পাইসজেট বিমান, ওমান এয়ার, আলজাজিরা এয়ারওয়েজ, কুয়েতভিত্তিক এয়ারলাইনস জাজিরা এয়ারওয়েজ ইত্যাদি। বর্তমানে এ বিমানবন্দর দিয়ে আন্তর্জাতিক রুটে ফ্লাইট পরিচালনাকারী সংস্থাগুলোর মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ বিমান, ইউএস-বাংলা, এয়ার অ্যারাবিয়া, সালাম এয়ার ও ফ্লাই দুবাই। এ বিষয়ে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন তাসলিম আহমেদ বলেন, ‘বিদেশি বিমান সংস্থাগুলো এখানে এসেছে ব্যবসা করতে। প্রয়োজনীয়সংখ্যক যাত্রী পাচ্ছে না বলেই তারা ফ্লাইট বন্ধ করে দিয়েছে। এখানে আমাদের কিছু করার নেই।’ আটাব চট্টগ্রাম অঞ্চলের সাবেক যুগ্মসম্পাদক এম এ মান্নান বলেন, ‘শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে একের পর এক বিমান সংস্থার সেবা বন্ধের বিষয়টি দুঃখজনক। সংস্থাগুলোর চলে যাওয়ার নেপথ্যে রয়েছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের নানান গাফিলতি এবং প্রয়োজনীয় যাত্রী না পাওয়া। বিমান সংস্থাগুলো চলে যাওয়ার কারণে প্রতিযোগিতা কমে গেছে। ফলে যাত্রীরা ন্যায্যমূল্যে টিকেট প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।’ এদিকে শাহ আমানত বিমানবন্দরের আন্তর্জাতিক রুটে বিমান বন্ধের নেপথ্যে রয়েছে অভিযোগের পাহাড়। এর মধ্যে রয়েছে বিমানবন্দরের নানান অব্যবস্থাপনা, আন্তর্জাতিক মানের সুবিধা না থাকা, অবকাঠামো, প্যাসেঞ্জারি বিল্ডিং সক্ষমতা না থাকা, প্রয়োজনীয়সংখ্যক লাগেজ বেল্ট না থাকা অন্যতম। তবে রানওয়ের উন্নতিসহ নানান পদক্ষেপের কারণে বিমানবন্দর রানওয়ে দিয়ে এখন বাংলাদেশে আসা সবচেয়ে বড় উড়োজাহাজ ‘বোয়িং ৭৭৭’ কিংবা ‘বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার’ এবং ‘এয়ারবাস এ ৩২০’ নামতে পারছে অনায়াসে। তবে একসঙ্গে তিন-চার শ যাত্রীর ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করার জন্য পর্যাপ্ত কাউন্টার নেই। নেই পর্যাপ্ত ব্যাগেজ বেল্ট। বেল্ট কক্ষেই যাত্রীদের জটলা লেগে যায়। আর যাত্রী বেশি হওয়ায় একেকটি লাগেজ পেতে দেড় ঘণ্টার বেশি সময় লাগছে। তবে সংশ্লিষ্টদের মতে, বিদেশি এয়ার?লাইনসের ফ্লাইট চট্টগ্রাম বিমানবন্দর থেকে পরিচালনা বন্ধ হলেও বর্তমানে চালু থাকা এয়ারলাইনগুলো ফ্লাইট সংখ্যা বৃদ্ধির পরিকল্পনা করছে। তবে সংস্থাগুলো কবে থেকে ফ্লাইট বাড়াবে সে বিষয়ে জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights