কমলার প্রার্থিতায় উজ্জীবিত তরুণ প্রজন্ম

অনলাইন ডেস্ক

নভেম্বরের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে সামনে রেখে ডেমোক্রেটিক পার্টির তরুণ কর্মী ইয়ামপিয়েরে লুগো গত কয়েক মাস ধরে নর্থ ক্যারোলাইনায় তরুণ প্রজন্মের ভোটারদের সাথে নিবিড়ভাবে যোগাযোগ করে যাচ্ছেন। তিনি জানান, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়ানোর পর এবং বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস প্রার্থী হওয়ার পর তরুণদের মধ্যে ভোট দেওয়ার আগ্রহ ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন এই নির্বাচনে তরুণ ভোটারদের প্রভাবকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচনা করা হচ্ছে। নর্থ ক্যারোলাইনার একটি স্কুলে প্রশাসনিক সহকারী হিসেবে কাজ করা লুগো বলেন, ‘আমি আমার বয়সী অনেকের সাথেই কথা বলেছি। সবার অভিমত এক—তারা কম বয়সী ও উদ্যমী একজন প্রার্থী পেয়ে অনেক বেশি আশাবাদী।’

প্রথমে অনেকেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকার চিন্তা করছিলেন। তবে কমলা হ্যারিস প্রার্থী হওয়ায় তারা আবারো ভোট দেওয়ার কথা ভাবছেন। মাত্র এক মাস আগে লুগো যখন সাউথ ক্যারোলাইনার সীমান্তবর্তী লরিনবার্গ এলাকায় বাইডেনের প্রচারণায় কাজ করছিলেন, তখন তরুণদের মধ্যে হতাশা লক্ষ্য করেছিলেন। কারণ, তখন তাদের জন্য কেবলমাত্র ৮১ বছর বয়সী বাইডেন এবং ৭৮ বছর বয়সী ডোনাল্ড ট্রাম্প ছাড়া আর কোনো বিকল্প ছিল না।
লুগোর ধারণা, ৫৯ বছর বয়সী কমলা হ্যারিস নর্থ ক্যারোলাইনায় উল্লেখযোগ্য সমর্থন পাবেন। বিশেষ করে এই অঙ্গরাজ্যের তরুণ ভোটারদের মধ্যে তার প্রার্থিতাকে ঘিরে একটি বিশেষ উৎসাহ কাজ করছে। যদিও ২০০৮ সালে বারাক ওবামার বিজয়ের পর থেকে ডেমোক্র্যাট কোনো প্রার্থী এখানে জয়ী হতে পারেননি। তবে এবার কমলা হ্যারিসের জন্য একটি ভিন্ন চিত্র প্রত্যাশা করা হচ্ছে।

তবে নর্থ ক্যারোলাইনায় জয়লাভ করতে হলে কমলা হ্যারিসকে অর্থনীতি সামলানোর বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখতে হবে। অর্থনৈতিক সংকট ও বৈষম্যের কারণে এখানে ভোটারদের মধ্যে যে উদ্বেগ রয়েছে, তা মোকাবিলা করা জরুরি। নর্থ ক্যারোলাইনার যুব ডেমোক্র্যাট শাখার প্রেসিডেন্ট ২৫ বছর বয়সী জ্যাক ফিনলে বলেন, ‘এই নভেম্বরে নর্থ ক্যারোলাইনা নতুন কিছু দেখাবে। তবে এর জন্য আমাদের প্রচারণা আরও সুসংগঠিত ও সঠিকভাবে পরিচালিত হতে হবে।’

পিউ রিসার্চ সেন্টারের তথ্য অনুসারে, ২০২০ সালের নির্বাচনে ১৮ থেকে ৩৯ বছর বয়সী ভোটারদের মধ্যে বাইডেনের জনপ্রিয়তা উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি ছিল। এখন সেই জনপ্রিয়তা ধরে রেখে তরুণ ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে নিয়ে আসতে হবে। বিশেষ করে যারা গত কয়েক বছরে রাজনীতির প্রতি অনুৎসাহী হয়ে পড়েছেন, তাদের কাছে পৌঁছানোর প্রয়োজন।

ডেমোক্রেটিক কর্মীরা ঐতিহ্যবাহী প্রচারণা পদ্ধতিতে ফিরে গেছেন বিশেষ করে স্কটল্যান্ড কাউন্টির মতো প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এলাকাগুলোতে। ২০১৬ সালে হিলারি ক্লিনটন সেখানে ট্রাম্পকে পরাজিত করেছিলেন। তবে ২০২০ সালে বাইডেন সেখানে মাত্র ২৮৭ ভোটে পরাজিত হন। এই এলাকাটিতে তরুণদের ভোটাধিকারের ওপর অনেক কিছু নির্ভর করছে বলে মনে করেন ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রতিনিধি গারল্যান্ড পিয়ার্স। তিনি বলেন, ‘তরুণদের ভোটকেন্দ্রে নিয়ে আসাই হবে নির্বাচনী লড়াইয়ের মূল চাবিকাঠি। কমলা হ্যারিসের প্রার্থিতা তরুণদের মধ্যে যে উদ্দীপনা তৈরি করেছে, তা নিশ্চিতভাবেই নর্থ ক্যারোলাইনার নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে। তবে অর্থনীতি এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights