দিনাজপুর বাহাদুর বাজারে খাজনার নামে কোটি টাকা চাঁদাবাজি অতিষ্ঠ সাধারণ ব্যবসায়ীরা
আব্দুস সালাম, দিনাজপুর প্রতিনিধি ॥ দিনাজপুর সদর উপজেলার পৌরসভার অধিনস্থ
বাহাদুর বাজারে সরকারিভাবে খাজনার নামে প্রতি বছর কোটি টাকা চাঁদাবাজি হলেও
নীরব ভূমিকায় পৌর প্রশাসন। চাঁদা না দিলে বাজারে কোনো দোকান বসাতে দেয় না এই
চাঁদাবাজ চক্রটি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সদর হাসপাতাল মোড় থেকে গোলকুঠি হয়ে বাহাদুর বাজার
ট্র্যাফিক পর্যন্ত পৌরসভার রাস্তায় বিভিন্ন শাক-সবজির দোকান বসিয়ে অবৈধভাবে
জামানত বাবদ হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা এবং লিলিমোড় থেকে হোন্ডা মোড় পর্যন্ত
শাক-সবজি ও কলার পাইকারি ব্যবসায়ীদের থেকে প্রতিদিন খাজনার নামে নেয়া হয় মোটা
অঙ্কের অর্থ। পৌরসভার রাস্তায় প্রতিদিন মধ্যরাত থেকে পরের দিন বিকেল পর্যন্ত এই
রাস্তাগুলিতে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হওয়ায় চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হয় গোলকুঠি
এলাকাবাসীর।
এ বিষয়ে গোলকুঠি এলাকার মানুষের সাথে কথা হলে তারা দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, আমরা
মনে করি গোলকুঠিতে বসতবাড়ি করে পাপ করেছি কারণ আমাদের পরিবারের কেউ অসুস্থ
হলে ভোররাত থেকে দুপুর পর্যন্ত কোন অ্যাম্বুলেন্স এই এলাকায় প্রবেশের কোন উপায় নেই।
চাঁদাবাজরা সরকারি রাস্তা পর্যন্ত ভাড়া দিয়ে বসিয়েছে শতাধিক অবৈধ দোকান। ফলে নিজ
বাসায় যাতায়াতে বিঘ্ন সৃষ্টি হলেও আমরা কিছু বলতে পারি না। আমরা এর প্রতিবাদ
করতে গেলেই নানান প্রকার হুমকি ধামকির সম্মুখীন হতে হয়। আমরা পৌর প্রশাসনের
কাছে জানতে চাই পৌরসভা থেকে কি বাজার ইজারা দেয়া হয়েছে নাকি সরকারি রাস্তা
ইজারা দিয়েছেন। পৌর প্রশাসনের নাকের ডগায় বসে প্রতিদিন মোটা অঙ্কের অর্থ
চাঁদাবাজি করছে একটি চক্র অথচ তাদের ব্যাপারে কোন আইনি ব্যবস্থা নেয়া তো দূরের কথা
তাদের দিকে কোন নজরদারিই নেই পৌর প্রশাসনের।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাহাদুর বাজারের কয়েকজন মুরগী ব্যবসায়ী বলেন, আমরা পৌরসভার
ইজারার আওতাধীন নই। তবুও ইজারার নামে আমাদের প্রতিটি দোকান থেকে প্রতিদিন
চাঁদা নেয়া হয় ১০০ টাকা। এই টাকা দিতে কেউ অস্বীকার করলে তাকে বাজারে ব্যবসা না
করার হুমকি ধামকি দিয়ে থাকে চাঁদাবাজরা।
অপরদিকে বিশেষ করে লিলিমোড় থেকে বাহাদুর বাজার ট্র্যাফিক মোড় পর্যন্ত রাস্তাটিতে
প্রায় ৫০টি দোকান বসিয়ে সারা বছর যানজটের সৃষ্টি করে থাকে। এই দোকানগুলো
থেকেও চাঁদা নেয়ার কথা শোনা যায়। পবিত্র মাহে রমজান মাসে শহরের ফুটপাত দখল করে
অবৈধ ভাবে বসানো দোকানগুলো উচ্ছেদের ব্যাপারে দিনাজপুর জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপ
কামনা করেছে ভুক্তভোগী পথচারীরা।