ছাড় দেবে না আওয়ামী লীগের কেউ, বিএনপির একক প্রার্থী
জেলার সবচেয়ে বড় আসন চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ (শিবগঞ্জ)। এই আসনের এমপি আওয়ামী লীগের সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুল। আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন পাওয়ার আশায় ইতোমধ্যেই মাঠে নেমে পড়েছেন আওয়ামী লীগের একাধিক মনোনয়নপ্রত্যাশী। তারা কেউ কাউকে ছাড় দিতে নারাজ। মনোনয়নপ্রত্যাশীরা নিজের ও দলীয় প্রধানের ছবিসহ বড় বড় পোস্টার, ব্যানার রাস্তার মোড়ে মোড়ে ঝুলিয়ে বিভিন্ন দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়ে দোয়া চাইছেন। অনেকেই দলীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে এলাকায় পথসভা ও উঠান বৈঠক করছেন। এ ছাড়া কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে জোর লবিং চালিয়ে যাচ্ছেন। আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশীরা বলছেন, দল যাকে মনোনয়ন দেবে তার পক্ষেই তারা কাজ করবেন। তবে ভোটাররা বলছেন, শিবগঞ্জে আওয়ামী লীগের যে অবস্থা তাতে কেউ মনোনয়ন বঞ্চিত হলে ভোটের সময় তারা একসঙ্গে কাজ করবেন এমন সম্ভাবনা খুব কম।
বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর একজন করে প্রার্থী প্রস্তুতি চালিয়ে যাচ্ছেন। এ ছাড়া জাতীয় পার্টির কোনো প্রার্থীর নাম শোনা না গেলেও বাংলাদেশ জাসদের একজন প্রার্থী রয়েছেন।
বর্তমানে এই আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশায় মাঠে রয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সংসদ সদস্য ডা. সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুল। তিনি প্রায় প্রতিদিন তার অনুসারীদের নিয়ে আওয়ামী লীগের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরছেন এবং আগামী নির্বাচনে নৌকার পক্ষে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছেন। বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আগামীতে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে শিবগঞ্জের মানুষ তাকে আবারও বিপুল ভোট দিয়ে বিজয়ী করবেন। এ ছাড়া নির্বাচনী মাঠে রয়েছেন সাবেক সচিব জিল্লার রহমান। অবসরে যাওয়ার পর থেকে তিনি এলাকায় অবস্থান করছেন এবং সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য প্রায় প্রতিদিন কোনো না কোনো এলাকায় গিয়ে উঠান বৈঠক করে নৌকায় ভোট চাইছেন। তিনি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, নির্বাচনে দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা তাকে দলের মনোনয়ন দিলে তিনি শতভাগ পাস করবেন এবং বিজয়ী হলে তিনি এলাকায় শিল্পাঞ্চল গড়ে তুলে বেকার সমস্যার সমাধান করবেন। জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান সৈয়দ নজরুল ইসলাম আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন।
আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়ার আশায় এলাকায় যোগাযোগ বাড়িয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ এনামুল হকের মেজ ভাই জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মোহাম্মদ নাজমুল হক রানা। এ ছাড়া প্রায় চার বছর রাজনীতিতে নীরব থাকার পর কয়েক মাস আগে কানসাট এলাকায় কয়েকটি সমাবেশ করেছেন কানসাট আন্দোলনের নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ গোলাম রাব্বানী। তিনি আগামী সংসদ নির্বাচনে নৌকার মনোনয়ন চাইবেন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে মনোনয়ন দেবেন বলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিলে এই আসনে দলীয় প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা সাবেক সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক শাহজাহান মিয়া। নিজের বিজয়ের ব্যাপারে তিনি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আওয়ামী লীগের দুঃশাসনে মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। তাই সুষ্ঠু নির্বাচন হলে তিনিই নির্বাচিত হবেন। এ ছাড়াও বিএনপির প্রার্থী হিসেবে শিবগঞ্জের সন্তান রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ শাহীন শওকতের নাম শোনা যাচ্ছে। যদিও তিনি এলাকায় আসেন না। অপরদিকে নতুন নিবন্ধন পাওয়া বাংলাদেশ জাসদের জেলা সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সম্পাদক মো. আজিজুর রহমান আজিজ আগামী সংসদ নির্বাচনে দলের প্রার্থী হবেন। এ ছাড়া দলীয় নিবন্ধন হারানো জামায়াত নেতা মাওলানা কেরামত আলী স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য দলীয় নেতা-কর্মী ছাড়াও সাধারণ মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়িয়ে দিয়েছেন।