স্কুলছাত্রকে হত্যার দায়ে আসামির যাবজ্জীবন
কুমিল্লা প্রতিনিধি:
বোনের সাথে খিচুড়ি নিয়ে ঝগড়ার জের ধরে কুমিল্লা সদরের শালধর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র আল-আমিনকে হত্যা করা হয়। হত্যার দায়ে ভাই মো. নেয়ামত উল্লাহ নামের এক যুবককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সাথে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়।
রবিবার কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ পঞ্চম আদালতের বিচারক মোছা. ফরিদা ইয়াসমিন এ রায় দেন। দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি নেয়ামত উল্লাহ (১৮) কুমিল্লা সদরের শালধর (সামারচর) গ্রামের মো. মোসলেম সরদারের ছেলে।
মামলার বিবরণে জানা যায়- ২০১৩ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি মাগরিবের নামাজের শেষে শালধর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র আল-আমিন (৯) মাহফিলের কথা বলে বাড়িতে ফিরে না আসায় স্বজনরা বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেন, না পেয়ে পরদিন কোতয়ালী মডেল থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন। পরের দিন শালধরের জনৈক দেলোয়ার হোসেনের বাগানের পুকুরে আল-আমিনের মরদেহ ভাসতে দেখেন। আল-আমিনের ঘাড়ে ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। এ ব্যাপারে ২০১৩ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি আল আমিনের বাবা ফয়েজ আহমেদ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে কোতয়ালী মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই পুলিশ পরিদর্শক মোঃ সারওয়ার আলম তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে আসামি মো. নেয়ামত উল্লাহ (১৮) ও মো. শাহ জাহানকে আটক করে আদালতে সোপর্দ করেন। ২০১৫ সালের ১২ ডিসেম্বর শালধর গ্রামের মোঃ মোসলেম সরদারের দুই ছেলে আসামি মোঃ নেয়ামত উল্লাহ (১৮), মোঃ শাহ জাহান (৩৪) এবং তাদের মা পলাতক আসামি মোর্শেদার (৫৫) বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়, আল-আমিন, নেয়ামতের ছোট বোনসহ কয়েকজন চাঁদা দিয়ে খিচুড়ি রান্না করে। খিচুড়ির ভাগাভাগি নিয়ে আল-আমিন ও নেয়ামতের ছোট বোনের ঝগড়া হয়। এনিয়ে নেয়ামত আল-আমিনকে দেখে নেয়ার হুমকি দেয়।
আসামি মো. নেয়ামত উল্লাহর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। অপর আসামিদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদেরকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন। রায় ঘোষণাকালে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আদালত কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন।
ওই রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি এপিপি মো. জাকির হোসেন বলেন, আশা করছি উচ্চ আদালত এই রায় বহাল রাখবেন।