অপরাধীদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে

ড. জাহিদ হোসেন

বিদেশে অর্থ পাচারকারীদের স্থানীয় সম্পদ আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বাজেয়াপ্তের চেষ্টা করা উচিত। কারণ অর্থ পাচারকারীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়া গেলে ভবিষ্যতে পাচারকারীরা আরো উৎসাহী হবেন।

অর্থপাচারের অঙ্কটা বড় কথা নয়, দু-একজনকেও যদি আইনি প্রক্রিয়ায় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা যায় তাহলে ভবিষ্যতে টাকা পাচার করার চিন্তাও করবে না অনেকে। টাকা পাচারের আগে যে প্রশ্রয় পেয়েছিল, সেই ধরনের প্রশ্রয় আর ভবিষ্যতে দেওয়া হবে না- এ ধরনের ভীতি তৈরি করতে হবে।

সেটার প্রমাণ হিসেবে কয়েকজন পাচারকারীকে শাস্তির আওতায় আনা উচিত। প্রমাণসাপেক্ষে অর্থ পাচারকারীদের স্থানীয় সম্পদ জব্দ করে নিলাম করা হলেও একটা দৃষ্টান্ত সৃষ্টি হবে। সরকারের জন্য এটা তুলনামূলকভাবে অনেক সহজ। তাই সরকার চাইলেই নিজের দেশে নিজের আইনের মাধ্যমে অর্থপাচারকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে।

একই সঙ্গে দেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনতে অন্তর্বর্তী সরকারকে দুই জায়গায় কাজ করতে হবে। টাকাটি কিভাবে, কোন পথে ও কার কাছে গেছে এবং এর সঙ্গে কার সংশ্লিষ্টতা ছিল সেটাকে ট্র্যাক করতে হবে। কারণ, অর্থপাচারকীরা সোজা পথ দিয়ে এটা করেনি। সোজা পথে করলে ধরা খাওয়ার সম্ভাবনাটা অনেক বেশি থাকে।

এ জন্য পাচারকারীরা বিভিন্ন দেশে খোলস কম্পানি তৈরি করে, এভাবে কয়েকটি দেশ ঘুরে যখন গন্তব্য দেশে যায় তখন সেটি কালো টাকা থেকে সাদা হয়ে যাচ্ছে।
তাই আগে অর্থপাচারের পুরো বিষয়টি ট্র্যাকের মাধ্যমে চিহ্নিত করে প্রমাণ করতে হবে। তারপর সংশ্লিষ্ট দেশের আইনি যে চুক্তি রয়েছে তাদের আইন প্রয়োগের মাধ্যমে আদালতে মামলা করে অর্থপাচারের সঠিক প্রমাণ দেওয়া গেলে অর্থ উদ্ধার করা সম্ভব হবে। যদিও এটা খুব কঠিন কাজ। এখানে সফল হওয়ার দৃষ্টান্ত খুব বেশি খুঁজে পাওয়া যায় না।

অর্থ ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করতে হলে এই কাজে যারা দক্ষ তাদের সহযোগিতা নিয়ে ট্র্যাকিং করে এবং পাচারের সব তথ্য সংগ্রহ করে তারপর মামলা করে আইনি প্রক্রিয়ায় টাকা উদ্ধারের ব্যবস্থা করতে হবে।

লেখক : সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ, বিশ্বব্যাংক, ঢাকা অফিস।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights