ক্ষমতাচ্যুত হাসিনা সরকারের পক্ষপাতদুষ্ট প্রতিবেদন প্রত্যাহার ব্রিটিশ এমপিদের

অনলাইন ডেস্ক

গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র আন্দোলনের জেরে পতন হয় আওয়ামী লীগ নেত্রী শেখ হাসিনা সরকারের। গণঅভ্যুত্থানের মুখে ওই দিন প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে পালিয়ে ভারতে যান ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা।

এরপর ৮ আগস্ট বাংলাদেশে গঠিত হয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এই সরকারে নেতৃত্ব দিচ্ছেন শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

বাংলাদেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে গঠিত এই সরকারের সমালোচনা করে যুক্তরাজ্যের একদল এমপি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। যুক্তরাজ্যের কমনওয়েলথবিষয়ক অল-পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপ (এপিপিজি) গত বছরের নভেম্বরে প্রতিবেদনটি দেয়।

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের পক্ষ নিয়ে ওই প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠার পর সেটি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন ওই সব ব্রিটিশ এমপি।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ‘দ্য গার্ডিয়ান’ এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুত সরকারের পক্ষে পক্ষপাতমূলক বলে অভিযোগ ওঠার পর বাংলাদেশের বিষয়ে বিতর্কিত ওই প্রতিবেদন প্রত্যাহার করেছে যুক্তরাজ্যের একদল সংসদ সদস্য।

বিতর্কিত ওই প্রতিবেদনে বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনা করা হয়। যদিও পরে ওই প্রতিবেদনে উল্লেখিত অনেক তথ্য সঠিক নয় বলে অভিযোগ ওঠে। এমনকি প্রতিবেদনে উল্লেখযোগ্য ভুলের বিষয়ে অভিযোগ সামনে আসে।

কর্মকর্তারা বলছেন, লেবার পার্টির একজন এমপি হাউস অব কমন্সে এটি সম্পর্কে অভিযোগ করার পর প্রতিবেদনটি আর বিতরণ করা হচ্ছে না এবং প্রতিবেদনটি এখন ‘পর্যালোচনার অধীনে’ রয়েছে।

একজন মুখপাত্র বলেছেন, “বিশ্লেষিত প্রতিবেদনটি পর্যালোচনার অধীনে থাকা অভ্যন্তরীণ নথি হিসেবে রয়ে গেছে এবং প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে পররাষ্ট্র দফতরের সাথে শেয়ার করা হয়েছে। এটি ব্যাপক প্রচারের উদ্দেশ্যে নয় এবং এটা আর বিতরণ করা হচ্ছে না বা কোনও ফলো-আপও করা হবে না।”

মূলত ভারতের নয়াদিল্লিভিত্তিক থিংক-ট্যাংক রাইটস অ্যান্ড রিস্ক অ্যানালাইসিস গ্রুপের তথ্য-প্রমাণের ওপর ভিত্তি করে বিতর্কিত এই প্রতিবেদনটি লেখা হয়েছিল।

মিথ্যা তথ্যে ভরপুর এবং ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা সরকারের প্রতি পক্ষপাতদুষ্ট উল্লেখ করে বিশেষজ্ঞরা এই রিপোর্টের সমালোচনা করেছেন। সম্প্রতি বাংলাদেশ থেকে ঘুরে যাওয়া লেবার পার্টির এমপি রূপা হক এই সপ্তাহে হাউস অব কমন্সে প্রতিবেদনটির কঠোর সমালোচনা করেছেন এবং এটিকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে কুচক্রী কাজ বলে অভিহিত করেছেন।

রূপা হক আরও বলেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূস ব্যক্তিগতভাবে তার কাছে বিতর্কিত এই প্রতিবেদনটির বিষয় উত্থাপন করেছিলেন এবং জিজ্ঞাসা করেছিলেন, “আপনার সরকার কী করছে, পার্লামেন্টের নামে এই মিথ্যা তথ্য ছড়ানো হচ্ছে?”

লন্ডনের স্কুল অব ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজের অধ্যাপক নাওমি হোসেন বলেছেন, “প্রতিবেদনে মৌলিক ত্রুটি রয়েছে… এটি মারাত্মকভাবে পক্ষপাতদুষ্ট বা অত্যন্ত খারাপ বিশ্লেষণ। জবাবদিহিতার হাতিয়ার হিসেবে এটি সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ।” সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

What do you like about this page?

0 / 400

Verified by MonsterInsights