চাঁদে আঘাত হানতে পারে ‘সিটি কিলার’ গ্রহাণু
অনলাইন ডেস্ক
‘২০২৪ ওয়াইআর৪’ নামের একটি গ্রহাণু ধেয়ে আসছে পৃথিবীর দিকে। এটি এতই বড় যে একটি শহরকে নিশ্চিহ্ন করতে পারে। শুরুতে বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা ছিল, এটি পৃথিবীতে আঘাত হানতে পারে। তবে এখন বলা হচ্ছে চাঁদে আঘাত হানারও সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে।
২০৩২ সালে গ্রহাণুটি পৃথিবীতে আঘাত হানতে পারে বলে ২.৩ শতাংশ আশঙ্কার কথা জানান মহাকাশ বিজ্ঞানীরা। ৭ ফেব্রুয়ারি নাসার বিজ্ঞানীরা গ্রহাণুটির পৃথিবীর সঙ্গে সংঘর্ষের সম্ভাবনা বাড়িয়ে ১.২ শতাংশ থেকে ২.৩ শতাংশে উন্নীত করেন।
অনুমান করা বেশ কঠিন হলেও সম্ভাব্য বিপজ্জনক গ্রহাণুটি আনুমানিক ১৮০ ফুটজুড়ে প্রশস্ত। প্রায় ৩০ হাজার মাইল প্রতি ঘণ্টায় এটি মহাকাশে ভ্রমণ করছে। এটি আঘাতের পর প্রায় ৮ মেগাটন শক্তি নির্গত করতে পারে, যা জাপানের হিরোশিমা ধ্বংসকারী পারমাণবিক বোমার শক্তিরও ৫০০ গুণের বেশি।
অ্যারিজোনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাটালিনা স্কাই সার্ভের অপারেশন ইঞ্জিনিয়ার ডেভিড র্যাঙ্কিন বলেছেন, বর্তমানে গ্রহাণুটি আমাদের উপগ্রহ চাঁদে আঘাত হানার ০.৩ শতাংশ সম্ভাবনা রয়েছে। তবে আমি অত্যন্ত সন্দেহ করি যে, এটি কোনো বড় হুমকি সৃষ্টি করবে না।
তবে চাঁদে আঘাত হানলে এটি পৃথিবী থেকেও দেখা যাবে বা এর প্রভাব পড়বে বলে জানান তিনি। বলেন, চাঁদের সঙ্গে সংঘর্ষ ৩৪০টি হিরোশিমা বোমার চেয়েও বেশি শক্তি নির্গত করতে পারে। এটি হলে পৃথিবী থেকে খুব ভালোভাবেই তা দৃশ্যমান হবে।
লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজের গ্রহবিজ্ঞানের অধ্যাপক গ্যারেথ কলিন্স নিউ সায়েন্টিস্টকে বলেন, চাঁদে আঘাত হানলেও ‘পৃথিবীতে আমরা বেশ নিরাপদে থাকব’। তবে সংঘর্ষের ফলে নিঃসৃত কোনো উপাদান পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে ঢুকে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ইতিহাস বলে, চাঁদে এর আগেও অসংখ্য গ্রহাণু বর্ষণ হয়েছে। এর চিহ্ন চাঁদের পৃষ্ঠ দ্বারা দেখা যায়। মহাকাশের শিলাটি পৃথিবী বা চাঁদে আঘাত করার সম্ভাবনা এখনো খুব কম। বিজ্ঞানীদের একটি আন্তর্জাতিক দল জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ দিয়ে এ সংশ্লিষ্ট জরুরি পর্যবেক্ষণ করছেন।
জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা পৃথিবী থেকেও টেলিস্কোপ ব্যবহার করে গ্রহাণুটি পর্যবেক্ষণ করেছেন। তারা গ্রহাণুটি থেকে বাউন্স করা আলোর পরিমাণ পরিমাপ করে এর আকার অনুমান করেছেন।