দুই দিনে চবি প্রশাসন থেকে সরে দাঁড়ালেন ২৩ পদের ১৯ শিক্ষক
চবি প্রতিনিধি
ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) প্রশাসনিক পদ থেকে আরও তিনজন পদত্যাগ করেছেন। সোমবার (১৩ মার্চ) দুপুরে চবির রেজিস্ট্রারের কাছে তারা পদত্যাগপত্র জমা দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার কে এম নূর আহমদ বলেন, চারটি প্রশাসনিক পদ থেকে তিনজন পদত্যাগ করেছেন। তারা ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ চেয়েছেন। তারা পাঁচটি প্রশাসনিক পদে ছিলেন। ব্যক্তিগত কারণ দেখালেও একজন রাজনৈতিক আদর্শে প্রক্টরের সাথে অমিল হাওয়ায় পদত্যাগ করেছেন।
পদত্যাগকারীরা হলেন, পরিবহন দপ্তরের প্রশাসক ও খালেদা জিয়া হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম। তিনি দুইটি পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। এছাড়া সহকারী প্রক্টর মোহাম্মদ ইয়াকুব ও অতীশ দীপঙ্কার হলের প্রভোস্ট ড. সুমন বড়ুয়াও পদত্যাগ করেছেন।
নতুন প্রক্টরের আদর্শ অমিল হওয়ায় পদত্যাগ করলেন তিন বছর দায়িত্ব পালন করা সহকারী প্রক্টর মোহাম্মদ ইয়াকুব বলেন। তিনি বলেন, বর্তমান প্রক্টর জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি করতো ছাত্র জীবনে। আমি তিন বছর ধরে সহকারী প্রক্টরের দায়িত্ব পালন করেছি। সবাই পদত্যাগ করলেও গতকাল করিনি। অথচ শিবিরের রাজনীতি করা একজনকে দায়িত্ব দেয়ার আগে আমার সাথে কথা বলেনি। কথা বললে কখনো হ্যাঁ বলতাম না। আদর্শিক জায়গায় এটা মেনে নেয়া যায় না। তাই প্রতিবাদে পদত্যাগ করেছি।
তবে পদত্যাগ করা সহকারী প্রক্টরের অভিযোগটি হাস্যকর বলেন প্রক্টর ড. মোহাম্মদ নুরুল আজিম সিকদার। তিনি বলেন, এসব বিষয় প্রমাণ করুক। আমরা জামায়াত-শিবিরের সাথে সংগ্রাম করতে করতে বড় হয়েছি।
এর আগে গতকাল রবিবার প্রথম দফায় ১৮টি প্রশাসনিক পদের ১৬ জন শিক্ষক একযোগে পদত্যাগ করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম পরিচালনায় উপাচার্যের সঙ্গে দ্বন্দ্বের জেরে তারা পদত্যাগ করেন।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম পরিচালনা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে উপাচার্য ড. শিরীণ আক্তারের সঙ্গে এই শিক্ষকদের বিরোধ চলছিল, যাদের সবাই এই উপাচার্যের সময়কালেই প্রশাসনিক বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পেয়েছেন। উপাচার্যের সিদ্ধান্তে আত্মীয়স্বজনের হস্তক্ষেপ, সিন্ডিকেট সদস্যের প্রভাব বিস্তারসহ বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষকদের দ্বিমত ছিল।
পদত্যাগী শিক্ষকরা মনে করেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নিয়ে যেসব সমালোচনা ও বিতর্ক তৈরি হয়েছে সাম্প্রতিক সময়ে, এতে উপাচার্যের ঘনিষ্ঠজনদের দায় আছে। কিন্তু প্রশাসনিক পদে থাকায় অযথা তাদের দুর্নামের দায় নিতে হচ্ছে। এ অবস্থায় ১৬ শিক্ষক প্রশাসনিক পদ থেকে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।
এ নিয়ে শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মুস্তাফিজুর রহমান সিদ্দিকী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ভঙ্গ করে প্রশাসন পরিচালনা করা হচ্ছে। শিক্ষকসহ নিয়োগ নিয়ে নানা কথা উঠেছে। সিন্ডিকেট নির্বাচনের বৈঠক করে ভাগ বাটোয়ারা করে নিচ্ছেন। এখন হয়তো সেই ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে অমিল হয়েছে। তাই পদত্যাগ করছেন।