নিরাপত্তা চান পোশাকশিল্পের মালিকেরা
নিজস্ব প্রতিবেদক
শ্রমিক–কর্মচারীদের পাশাপাশি কারখানার নিরাপত্তা চান সাভারের আশুলিয়ার পোশাকশিল্পের মালিকেরা। রাজধানীর উত্তরায় তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর কার্যালয়ে সোমবার সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন সাভারের আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলের কয়েকটি তৈরি পোশাকশিল্পের মালিক।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিজিএমইএর জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আবদুল্লাহ হিল রাকিব, সহসভাপতি আসিফ আশরাফ, পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল, শেহরিন সালাম ঐশী, ডেকো লিগেসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কল্পন হোসেন প্রমুখ।
বিজিএমইএর জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আবদুল্লাহ হিল রাকিব বলেন, কারখানাগুলোকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দিতে হবে। নিরাপত্তা পাওয়া মালিকদের অধিকার। তা না হলে কারখানাগুলো রুগ্ণ হয়ে যাবে। সেগুলোকে টিকিয়ে রাখা যাবে না।
এসময় হাফিজুর রহমান নামে এক ব্যবসায়ী তাঁর আশুলিয়ার কারখানার শ্রমিক অসন্তোষ ও কারখানা ভাঙচুরের চিত্র তুলে ধরেন। তিনি বলেন, হঠাৎ একদিন শ্রমিকেরা সাত দফা দাবি জানালেন। দাবি আদায়ে তাঁরা প্রশাসন প্রধানকে ব্যাপক মারধর করেন। এ ঘটনায় মামলা হয়। পরে শ্রমিকদের দাবির মুখে লিখিতভাবে তা প্রত্যাহারের আশ্বাস দেওয়া হয়। তারপর শ্রমিকেরা আরও কয়েকজনকে চাকরিচ্যুত করার দাবি করেন। পরে একদিন একজন উপমহাব্যবস্থাপককে মারধর করে অজ্ঞান করে ফেলেন তাঁরা।
এক প্রশ্নের জবাবে হাফিজুর রহমান বলেন, সেপ্টেম্বর মাসে সব মিলিয়ে পাঁচ থেকে সাত দিন কারখানায় উৎপাদন হয়েছে। বাকি দিনগুলোতে কাজ হয়নি। তাতে দিনে ৬০ থেকে ৭০ লাখ টাকার উৎপাদন লোকসান হয়েছে। শ্রম অসন্তোষের কারণে সময়মতো পণ্য জাহাজীকরণ করতে না পারায় ৪৮ লাখ ডলারের পণ্য নিজ খরচে উড়োজাহাজে পাঠাতে হয়েছে। ২৬ হাজার ডলার মূল্যছাড় দিতে হয়েছে এক ক্রেতাকে।
উল্লেখ্য, সেপ্টেম্বর মাসেই বিভিন্ন দাবিতে আশুলিয়ায় পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেছেন। শ্রমিকদের টানা বিক্ষোভের কারণে তাঁদের ১৮ দফা দাবি বাস্তবায়নে সম্মত হয় মালিকপক্ষ। ২৪ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার মালিক ও শ্রমিকেরা একটি যৌথ ঘোষণা দেন। এতে বলা হয়, দেশের পোশাকশিল্পের সব কারখানার শ্রমিকদের মাসিক হাজিরা বোনাস ২২৫ টাকা বাড়ছে। টিফিন ও রাত্রিকালীন ভাতাও (নাইট বিল) বাড়বে। আগামী অক্টোবরের মধ্যে বিদ্যমান নিম্নতম মজুরি বাস্তবায়ন করা হবে।
অবশ্য তারপরও শ্রম অসন্তোষ পরিস্থিতির পুরোপুরি উন্নতি হয়নি। সোমবার আশুলিয়ায় তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় গুলিতে একজন শ্রমিক নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত পাঁচজন। আহত ব্যক্তিদের সাভারের বেসরকারি এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।