ফ্রি ফায়ার খেলতে গিয়ে প্রেম, অতঃপর…

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল

অনলাইন গেম ফ্রি ফায়ার খেলার সূত্র ধরে পরিচয়। অতঃপর দেড়মাসের মধ্যেই গভীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে প্রতারক চক্র ১৭ বছরের এক তরুণীর কাছ থেকে বিপুল পরিমাণে স্বর্ণ ও নগদ অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে।

যদিও এ ঘটনায় এরইমধ্যে দুইজনকে গ্রেফতার করেছে বরিশাল মহানগরীর এয়ারপোর্ট থানা পুলিশ। পাশাপাশি কিছু স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থও উদ্ধার করা হয়েছে।

শুক্রবার দুপুরে বরিশাল মহানগর পুলিশের উত্তর বিভাগের উপ কমিশনার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে উপ পুলিশ কমিশনার রুনা লায়লা বলেন, ১২ ডিসেম্বর শ্রুতি রানী পাল নামে ১৭ বছরের এক তরুনী ঢাকা মেট্রোপলিটনের লালবাগ থানায় একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে অপহরণ, স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থ আত্মসাতের ঘটনার একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের বিষয়টি বিস্তারিত জানার পরে লালবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ভিকটিমের পরিবারকে বরিশাল মেট্রোপলিটনের এয়ারপোর্ট থানা পুলিশের কাছে প্রেরণ করেন। পাশাপাশি লালবাগ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এয়ারপোর্ট থানা পুলিশকে বিষয়টি সম্পর্কে অবগতও করেন।

যেখান থেকে জানা গেছে, এয়ারপোর্ট থানাধীন মো. নাফিজুর রহমান নামে এক যুবক আনুমানিক দেড়মাস পূর্বে অনলাইন গেম ফ্রি ফায়ার খেলার মাধ্যমে শ্রুতি রানী পালের সাথে পরিচিত হয়। এরপর সেখান থেকে শ্রুতির সাথে নাফিজুর গভীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলেন। পরবর্তীতে প্রেমের ফাঁদে ফেলে গত ১০ ডিসেম্বর শ্রুতির কাছ থেকে ২১ ভরি ২ আনা স্বর্ণালংকার ও নগদ ৫৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়ে অজ্ঞাত স্থানে পালিয়ে যায় নাফিজুর। এছাড়া এরআগে নগদ ও বিকাশ একাউন্টের মাধ্যমে শ্রুতির কাছ থেকে আরও ৩৬ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয় নাফিজুর।

রুনা লায়লা বলেন, ভিকটিমের এমন অভিযোগের প্রাথমিক প্রযুক্তিগত সত্যতা পেলে লালবাগ থানা পুলিশ একটি মামলা রুজু করেন এবং সেই মামলার কপি ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এয়ারপোর্ট থানায় প্রেরণ করেন। যার প্রেক্ষিতে এয়ারপোর্ট থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সনজীত চন্দ্র নাথ এর নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল রহমতপুর এলাকায় গত রাতে অভিযান পরিচালনা করে।

তিনি বলেন, অভিযানে প্রতারক চক্রের প্রধান সদস্য ও মামলার প্রধান আসামী এয়ারপোর্ট থানাধীন পশ্চিম পাংশা এলাকার মিজানুর রহমানের ছেলে মো. নাফিজুর রহমান (২২) ও তার সহযোগী গোপালগঞ্জ জেলার কোটালীপাড়া থানার রাধাগঞ্জ এলাকার শামিউল আলমের ছেলে শফিউল আলম প্রিন্সকে (২৩) কে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে তাদের হেফাজতে থাকা বিশেষ কায়দায় লুকানো অবস্থা থেকে ১১ ভরি ১ আনা ২ রতি স্বর্ণালংকার, নগদ ৭১০ টাকা ও প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত দুটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।

তিনি বলেন, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা লালবাগ থানার এসআই অপু মিত্র আসামীদের নিয়ে যাওয়ার জন্য এসেছেন, নিয়মানুযায়ী গ্রেফতারকৃতদের লালবাগ থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights