বশেমুরকৃবিতে মৃত্তিকা সামিট: মাটি সংরক্ষণে নতুন দিগন্ত উন্মোচন
গাজীপুর প্রতিনিধি
বশেমুরকৃবি আইটি সোসাইটি এবং বশেমুরকৃবির মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের যৌথ উদ্যোগে সফলভাবে অনুষ্ঠিত হলো মৃত্তিকা সামিট (Soil Summit) ২০২৪। মাটির স্বাস্থ্য, টেকসই চাষাবাদ এবং জলবায়ু অভিযোজন নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বুধবার সন্ধ্যায় আয়োজিত এ সম্মেলনে জুম, ইউটিউব এবং ফেসবুক লাইভ প্ল্যাটফর্মে প্রায় ৪০০ অংশগ্রহণকারী যুক্ত হন। সম্মেলনের মূল আকর্ষণ ছিল বিশেষজ্ঞদের অংশগ্রহণে একটি প্রভাবশালী প্যানেল আলোচনা।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন বশেমুরকৃবি’র উপাচার্য প্রফেসর ড. জিকেএম মোস্তাফিজুর রহমান। উপাচার্য তার বক্তব্যে মাটির সঠিক ব্যবস্থাপনার গুরুত্ব এবং বায়োচার ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কীভাবে সহায়তা করে তা তুলে ধরেন। একই সঙ্গে টেকসই কৃষি পদ্ধতি, প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন এবং মাটি সংরক্ষণের জন্য জনগণের ভূমিকার উপর গুরুত্বারোপ করেন।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর ড. জহিরউদ্দিন মাটির উৎপাদনশীলতা এবং সংরক্ষণ নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি মাটির উর্বরতা বজায় রাখতে সার ব্যবস্থাপনার সঠিক পদ্ধতি এবং কৃষকদের নৈতিক দায়িত্বের কথা উল্লেখ করেন। টেকসই কৃষি এবং মাটি সংরক্ষণে ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার উপায় নিয়ে তার বক্তব্য ছিল অনুপ্রেরণামূলক।
বশেমুরকৃবি’র ট্রেজারার প্রফেসর ড. সফিউল ইসলাম আফ্রাদ আলোচনা করেন মাটি কীভাবে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ভূমিকা রাখে। তিনি ব্যাখ্যা করেন, মাটি সংরক্ষণ খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এবং জিরো হাঙ্গার ও ক্লাইমেট অ্যাকশন লক্ষ্যমাত্রায় অবদান রাখে।
বশেমুরকৃবি’র ইনস্টিটিউট অব ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট এর পরিচালক প্রফেসর ড. মিজানুর রহমান আলোচনা করেন কীভাবে জলবায়ু পরিবর্তন মাটির স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করে। তিনি ব্যাখ্যা করেন, মাটি কীভাবে কার্বন সঞ্চয় করে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারে। তার বক্তব্যে ক্লাইমেট-স্মার্ট কৃষি পদ্ধতির গুরুত্ব উঠে আসে।
বশেমুরকৃবি’র পরিচালক (ছাত্রকল্যাণ) প্রফেসর ড. মোহাম্মদ সাইফুল আলম মাটির জীববৈচিত্র্যের গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি ব্যাখ্যা করেন, মাটির জীববৈচিত্র্য রক্ষা বাস্তুতন্ত্র এবং কৃষি উৎপাদনের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ।
অনুষ্ঠানের অন্যান্য আকর্ষণীয় অংশগুলো ছিল- একটি লাইভ কুইজ প্রতিযোগিতা, যেখানে মাটি এবং টেকসই উন্নয়ন বিষয়ক প্রশ্নের মাধ্যমে অংশগ্রহণকারীদের যুক্ত করা হয় এবং পূর্ববর্তী প্রতিযোগিতার ফলাফল ঘোষণা, যেখানে প্রবন্ধ, পোস্টার এবং ফটোগ্রাফি প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের নাম প্রকাশ করা হয়। অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনায় ছিলেন গ্রন্থনা রশিদ ও মহুয়া চক্রবর্তী এবং এ আয়োজন সফলভাবে সম্পন্ন করতে ভূমিকা রেখেছেন বশেমুরকৃবি আইটি সোসাইটির সদস্য রাফিদুল হুদা তনয়, শাহরিয়ার মোর্সেদ জাহিন, কাজি মারজান হাসান তিয়াল, সাদমান সিকদার, তামান্না তাসনিম জোহানা, ফাবিয়ান তাসকিন ও সৃজন পন্ডিত।ৎ
সমাপনী বক্তব্যে বশেমুরকৃবি আইটি সোসাইটির আহ্বায়ক রুদ্রনীল মন্ডল অতিথি এবং অংশগ্রহণকারীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, এ আলোচনায় উঠে আসা বিষয়গুলো ভবিষ্যতের কার্যক্রমে একটি দিকনির্দেশনা হিসেবে কাজ করবে।
উল্লেখ্য, বশেমুরকৃবি আইটি সোসাইটি দীর্ঘদিন ধরে প্রযুক্তি-নির্ভর উদ্যোগের মাধ্যমে উদ্ভাবন, সচেতনতা এবং সহযোগিতা প্রচার করে আসছে।