ভারতে বন্যায় নিহত শতাধিক, যমুনার পানিতে হাবুডুবু দিল্লি

ভারতের উত্তরাঞ্চলে ভয়াবহ পরিস্থিতি বিরাজ করছে। ভারী বৃষ্টি আর বন্যায় নাকাল জনজীবন। বন্যার কারণে স্কুল-কলেজ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। গত দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে বৃষ্টি-বন্যার কারণে সৃষ্ট বিভিন্ন দুর্ঘটনায় শতাধিক প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে বলে কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন। এপির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়।

এদিকে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হিমাচল প্রদেশে কমপক্ষে ৮৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে গত পাঁচ দিনে মারা গেছেন ৪২ জন। ওই রাজ্যে শতাধিক মানুষ বিভিন্ন দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন। বন্যার পানিতে গাড়ি, বাস, সেতু, বাড়িঘর ভেসে যাচ্ছে।

বুধবার থেকে বৃষ্টির কারণে বিভিন্ন দুর্ঘটনায় উত্তর প্রদেশে ১২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। রাজ্য সরকারের মুখপাত্র শিশির সিং এ তথ্য নিশ্চিত করেন। এদিকে বন্যার পানি অনেক আগে দিল্লির লালকেল্লা ছুঁয়েছে। এবার সুপ্রিম কোর্ট চত্বরেও পৌঁছে গেছে যমুনার পানি।

পুরো দিল্লিই এখন যমুনার পানিতে হাবুডুবু খাচ্ছে। বৃষ্টিতে যমুনার পানি বেড়ে যাওয়ায় বর্তমানে দিল্লির বহু এলাকা জলমগ্ন। যমুনার পানিতে ভেসে গেছে দিল্লির বহু বাড়িঘর, বাজার, রাস্তাঘাট, পর্যটনস্থল। অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে জনজীবন। রাজধানীর কোথাও কোমর পর্যন্ত আবার কোথাও বুক পর্যন্ত পানি।

রাস্তাঘাটে পানি জমে যাওয়ায় যানচলাচলও বন্ধ হয়ে গেছে। এ নিয়ে বেশ উদ্বিগ্ন প্রশাসন। দিল্লি সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দিল্লির সেচ ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ বিভাগের একটি যন্ত্রাংশ বিকল হয়ে যাওয়ার কারণে যমুনার পানি শহরের দিকে বয়ে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে দিল্লির কিছু এলাকায় খাবার পানি সরবরাহ এবং বিদ্যুৎ পরিষেবা বিচ্ছিন্ন হতে পারে বলেও জানিয়েছে প্রশাসন।

সেচ ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ বিভাগের কর্মকর্তা এবং বিপুল সংখ্যক কর্মী পানির প্রবাহ বন্ধ করার জন্য ইতোমধ্যেই ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ শুরু করেছেন। ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

যদিও এর মধ্যেই আশার কথাও শুনিয়েছে অরবিন্দ কেজরীওয়াল সরকার। সেন্ট্রাল ওয়াটার কমিশনের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার সারাদিন যমুনার পানি স্থিতিশীল ছিল এবং সন্ধ্যার পর থেকে তা কিছুটা নেমে এসেছে। বৃহস্পতিবার রাতে যমুনার পানির স্তর ছিল ২০৮.৬৬ মিটার। শুক্রবার সকালে তা ২০৮.৪৬ মিটারে নেমে এসেছে। ওয়াটার কমিশনের আশা শুক্রবার দুপুরের পর থেকে যমুনার পানি আরও কমবে এবং দুপুর নাগাদ তা ২০৮.৩০ মিটারে নেমে যাবে।

বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় ১৬ জুলাই পর্যন্ত দিল্লির সব স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখারও নির্দেশ দিয়েছে আম আদমি পার্টি (আপ) সরকার। দিল্লির বন্যা পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। বৃহস্পতিবার ফ্রান্স সফরে গিয়েছেন তিনি। কিন্তু সেখান থেকেই তিনি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে ফোন করে দিল্লির পরিস্থিতির খোঁজ নিয়েছেন বলে সরকারি সূত্র নিশ্চিত করেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights