শিক্ষকের বিরুদ্ধে ডাস্টার দিয়ে পিটিয়ে শিক্ষার্থীর হাত ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ

পিরোজপুর প্রতিনিধি

পিরোজপুরে মারিয়া আক্তার (৯) নামে তৃতীয় শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে ডাস্টার দিয়ে পিটিয়ে হাত ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক বিউটি রানী এদবরের বিরুদ্ধে। গতকাল সোমবার পিরোজপুর সদর উপজেলার ১১৩ নং পূর্ব শিকদার মল্লিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যাহ্ন বিরতির পরে তৃতীয় শ্রেণির ক্লাসে এ ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী মারিয়া আক্তার (৯) নাজিরপুর উপজেলার শ্রীরামকাঠি ইউনিয়নের উদয়তার গ্রামের মোঃ মামুন বেপারির মেয়ে এবং ১১৩ নং পূর্ব শিকদার মল্লিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী। অভিযুক্ত শিক্ষক বিউটি রানী এদবর ওই স্কুলের সহকারী শিক্ষক ও পিরোজপুর সদর উপজেলার পূর্ব শিকদার মল্লিক গ্রামের বাসিন্দা।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী জানান, বিউটি ম্যাডাম ক্লাসে এসে আমার কাছে পড়া জিজ্ঞেস করলে আমি ম্যাডামকে ঐ দিনের পাঠ্য পড়া বলে দেই। তখন আমাদের ক্লাসের এক শিক্ষার্থী বলে ম্যাডাম আপনি যে পড়া দিছিলেন তা মারিয়া না পড়ে কড়ি খেলছে। তাই ম্যাডাম আমাকে ডাস্টার দিয়ে পেটায়। এতে আমার হাত ভেঙে যায়। তারপরে বাড়িতে আসলে আমাকে নিয়ে হাসপাতালে গেলে ডাক্তার ব্যান্ডেজ করে দেয়। এ ঘটনায় অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তাদের অভিযোগ এর আগেও বহুবার ম্যাডাম ছাত্রছাত্রীদের এরকম বেদম পিটান পিটিয়েছে। এর কোন বিচার হয় নাই।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত শিক্ষক বিউটি রানী এদবর ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, আমার ভুল হয়েছে আমাকে আপনারা ক্ষমা করে দেন। আর কোনোদিন এমন হবে না। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাশিদা খানম জানান, স্কুল ছুটির পরে আমি বাড়ি যাওয়ার পথে আমার শিক্ষক পঙ্কজ বড়াল আমাকে বিষয়টি মুঠোফোনে জানায়। আমি ওই ম্যাডামে ঘটনাটি জিজ্ঞেস করলে সে জানায়, শিক্ষার্থী মারিয়াকে ক্লাসের পড়া লিখতে বললে সে লিখতে না পারায় তাকে ডাস্টার দিয়ে পেটালে হাত ভেঙে যায়। প্রধান শিক্ষক রাশিদা খানম আরো জানায়, আমি আজ (মঙ্গলবার) সকালে স্কুলে আসার পথে ওই শিক্ষার্থীর বাড়িতে গিয়ে তার খোঁজ খবর নিয়ে আসছি।

উপজেলা শিক্ষা অফিসার আমিনুল ইসলাম বলেন, তিনি ঘটনাটি শোনার সাথে সাথে সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সবুজ কান্তিকে ওই বিদ্যালয়ে পাঠিয়েছি, সে এসে আমাকে প্রতিবেদন দিলে আমি ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেব।

পিরোজপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আহমেদ সাব্বির সাজ্জাদ জানান, আমি অফিসের বাহিরে আছি। আপনার মাধ্যমে বিষয়টি শুনলাম। ঘটনার বিষয়ে আমি প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের মাধ্যমে জেনে আইনি ব্যবস্থা নেব।

এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার কুমারেশ চন্দ্র গাছি জানান, ওই বিদ্যালয়ে আমার শিক্ষা অফিসার (এ টি ও) সাহেব গিয়েছিল। উনি রিপোর্ট দিলে আমি দু-একদিনের মধ্যে ব্যবস্থা নেব।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহেদুর রহমান বলেন, এ বিষয়ে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights