সিলেটের চার উপজেলায় বন্যা

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট:

ভারতের মেঘালয় ও আসামের পাহাড়ি অঞ্চলে ভারি বর্ষণ ও সিলেটে টানা বৃষ্টিপাতে বন্যা দেখা দিয়েছে। সিলেটের চার উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। কয়েকটি স্থানে বন্যার পানি ওঠে সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

আকস্মিক বন্যায় গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর, কোম্পানীগঞ্জ ও কানাইঘাট উপজেলার অনেক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। পানিবন্দি মানুষদের উদ্ধারে প্রশাসনের পক্ষ থেকে চার উপজেলায় আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। উজানের ঢল ও বৃষ্টিপাতের কারনে সিলেটের সবকটি নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে ভারতের মেঘালয় ও আসামের পাহাড়ি এলাকায় টানা ভারি বর্ষন হচ্ছে। গেল দুইদিনে মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জি এলাকায় প্রায় এক হাজার মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে বলে জানিয়েছে সেদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তর। উজানে বৃষ্টিপাতের পানি সিলেটের সুরমা, কুশিয়ারা, লোভা, ধলাই ও পিয়াইন নদী হয়ে নেমে আসে সিলেটে। ফলে সীমান্তবর্তী চার উপজেলায় বন্যা দেখা দেয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গোয়াইনঘাট উপজেলার রুস্তমপুর, লেঙ্গুড়া, ডৌবাড়ি, নন্দীরগাঁও, পূর্ব ও পশ্চিম আলীরগাঁও, পশ্চিম জাফলং ও মধ্য জাফলং ইউনিয়নের বেশিরভাগ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। উপজেলার পানিবন্দি মানুষের জন্য ৫৬টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। বন্যাকবলিত লোকজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য বুধবার সকাল থেকে মাইকিং করা হচ্ছে। বন্যার পানিতে গোয়াইনঘাট উপজেলার সালুটিকর-গোয়াইনঘাট সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় উপজেলা সদরের সাথে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

এদিকে, জৈন্তাপুর উপজেলার নিজপাট লামাপড়া, বন্দরহাটি, ময়নাহাটি, জাঙ্গালহাটি, বড়খেলা, মেঘলী, তিলকৈপাড়া, ফুলবাড়ী, নয়াবাড়ী, হর্নি, বাইরাখেল, গোয়াবাড়ী, ডিবির হাওর, ঘিলাতৈল, মুক্তাপুর, বিরাইমারা হাওর, খারুবিল, লমানীগ্রাম, কাটাখাল, বাউরভাগ ও বাওন হাওরসহ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
এছাড়াও প্লাবিত হয়েছে কোম্পানীগঞ্জ ও কানাইঘাট উপজেলার বিভিন্ন এলাকা। গ্রামীণ সড়ক ডুবে যোগাযোগ ব্যাহত রয়েছে অনেক জায়গায়।

এ ব্যাপারে সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোবারক হোসেন জানান, ইতোমধ্যেই গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর, কোম্পানীগঞ্জ ও কানাইঘাট উপজেলায় আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রে পানিবন্দি লোকজন উঠতে শুরু করেছেন। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় জেলা প্রশাসন সার্বিক প্রস্তুতি নিয়েছে। সকল উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের সার্বক্ষণিক তদারকি করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
উজান থেকে নেমে আসা ঢল ও টানা বৃষ্টিপাতের কারণে সিলেটের সুরমা, কুশিয়ারাসহ সকল নদনদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে এবং কুশিয়ারা নদীর আমলশীদ ও সারিগোয়াইন নদীর সারিঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights