সৃষ্টিজগতে আল্লাহর সবচেয়ে বড় নিয়ামত

হাদি-উল-ইসলাম

সৃষ্টিজগতের ওপর আল্লাহ তাআলার নিয়ামত এত বেশি যে দুনিয়ার সব মানুষ সমবেতভাবে সেগুলো গুনতে চাইলে তা গুনে শেষ করতে পারবে না। মানুষের নিজের অস্তিত্বই একটি বিশাল জগৎ। চোখ, কান, নাক, হাত, পা ও দেহের প্রতিটি গ্রন্থি ও শিরা-উপশিরায় আল্লাহ তাআলার অসংখ্য নিয়ামত আছে। সূক্ষ্মতম ও বিস্ময়কর হাজারো যন্ত্রপাতি দিয়ে সাজানো প্রতিটি মানবদেহ।

মানুষের শরীর যেন একেকটি ভ্রাম্যমাণ কারখানা। এর বাইরে আসমান, জমিন, পাহাড়, নদী ও অন্য অসংখ্য সৃষ্টিতে জড়িয়ে আছে আল্লাহর নিয়ামতরাজি। আধুনিক বিজ্ঞান এখনো এসব সৃষ্টির রহস্যের কূল-কিনারা করতে পারেনি। এসব নিয়ে চিন্তা করলে বোঝা যায়, আল্লাহ তাআলার নিয়ামতরাজি গুনে শেষ করা বনি আদমের পক্ষে সম্ভব নয়।

মহান আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা আল্লাহর অনুগ্রহ গণনা করলে তার সংখ্যা নির্ণয় করতে পারবে না। আল্লাহ তো অবশ্যই ক্ষমাপরায়ণ, পরম দয়ালু।’ (সুরা : নাহল, আয়াত : ১৮)
আল্লাহ তাআলার নিয়ামতের তিনটি ধরন আছে :

(ক) সৃষ্টি সম্পর্কিত নিয়ামত (খ) সাহায্য সম্পর্কিত নিয়ামত (গ) হিদায়াত সম্পর্কিত নিয়ামত।

আর এসব নিয়ামতের মধ্যে ইসলাম সবচেয়ে বড় নিয়ামত, যা দিয়ে যুগে যুগে আল্লাহ তাআলা নবী-রাসুলদের পাঠিয়েছেন।

প্রত্যেক নবী-রাসুলকে আল্লাহ তাআলা তিনটি বিষয় বর্ণনার উদ্দেশ্যে পাঠিয়েছেন :

(১) মানুষের কাছে তাদের প্রতিপালক, সৃষ্টিকর্তা ও রিজিকদাতা পরিচয় দান করা, যাতে তারা তাঁর ইবাদত, সম্মান ও শুকরিয়া আদায় করতে পারে।

(২) মানুষকে তার রবের কাছে পৌঁছার রাস্তা সম্পর্কে পরিচয় করানো, আর তা হলো দ্বিন ইসলাম।

(৩) মুমিন ও কাফির আল্লাহর কাছে গমনের পর মানুষের জন্য কী থাকবে—সে সম্পর্কে তাদের জানানো। আর তা হচ্ছে, মুমিনদের জন্য জান্নাত এবং কাফিরদের জন্য জাহান্নাম। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যদি তোমরা আল্লাহর নিয়ামত গণনা করো, তবে তার সংখ্যা নিরূপণ করতে পারবে না। নিশ্চয়ই মানুষ অধিক অত্যাচারী এবং অকৃতজ্ঞ।’
(সুরা : ইবরাহিম, আয়াত : ৩৪)

আল্লাহ তাআলা আরো বলেন, ‘আর তোমাদের কাছে যেসব নিয়ামত আছে, সেসব আল্লাহর পক্ষ থেকে। অতঃপর দুঃখ-দুর্দশা যখন তোমাদের স্পর্শ করে, তখন তোমরা শুধু তাঁর কাছে ফরিয়াদ করো।’ (সুরা : নাহল, আয়াত : ৫৩)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights