সেই স্লোগান ইস্যুতে যা জানালেন জবির আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা
জবি প্রতিনিধি
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) দ্বিতীয় ক্যাম্পাস ইস্যুতে তথ্য উপদেষ্টা ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলামকে ঘিরে বিতর্কিত স্লোগান নিয়ে নিজেদের বক্তব্য স্পষ্ট করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
তারা বলেছেন, স্লোগানটি নিয়ে উপদেষ্টা নাহিদকে ঘিরে একটি কুচক্রী মহল ষড়যন্ত্র করছে। আমাদের কোনও শিক্ষার্থী ওইদিন এ ধরনের স্লোগান দেয়নি।
বুধবার বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের সামনে পাঁচ দফা দাবির সংগঠক কেএম রাকিবের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন মুখপাত্র তৌসিফ মাহমুদ সোহান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের এই মুখপাত্র বলেন, “জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় দ্বিতীয় ক্যাম্পাস আন্দোলন শুরু হওয়ার পর, মিছিলের জন্য বিভিন্ন স্লোগান তৈরি হয়। এরই অংশ হিসেবে ২ নভেম্বর একটি স্লোগান যোগ করা হয়। সেই স্লোগানটি ছিল মূলত ফ্যাসিবাদ আমলে নিয়োগপ্রাপ্ত দুর্নীতিবাজ ঠিকাদার ও প্রশাসনের বিরুদ্ধে।
মুখপাত্র আরও বলেন, বিগত ছয় বছরে তারা আমাদের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের জমি অধিগ্রহণ করতে পারেনি। প্রকল্পের মেয়াদ চারবার বৃদ্ধি করেও কাজ শেষ না করে বরং তারা নিজেদের পকেটভারীসহ রীতিমত পুকুরচুরির ঘটনা ঘটিয়েছে। এর এর দ্বারা কোনওভাবেই উপদেষ্টা নাহিদ কিংবা এই অন্তর্বর্তী সরকারকে ইঙ্গিত করা হয়নি।
তৌসিফ মাহমুদ বলেন, কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো সাবেক স্বৈরাচার সরকারের প্রেতাত্মারা এটা নিয়ে বিভিন্নভাবে ষড়যন্ত্র করে সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করছে। তাদের স্পষ্টভাবে বলতে চাই আপনারা ঐক্যের ফাটল ধরাতে পারবেন না। আমরা দেশের স্বার্থে স্বৈরাচার, দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ গড়ে তুলতে এক ও অদ্বিতীয়।
সংবাদ সম্মেলন শেষে সংগঠক কেএম রাকিব বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম হলেন আমাদের ছাত্র সমাজের প্রতিনিধি। আমরা তাকে কটাক্ষ করে স্লোগান কিংবা বক্তব্য দেওয়ার প্রশ্নই আসে না। আমরা বরং আওয়ামী লীগের আমলে নিয়োগপ্রাপ্ত ঠিকাদার এবং সেই সময়ের প্রশাসনকে ইঙ্গিত করে ওই স্লোগান দিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, যারা উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামকে নিয়ে প্রপাগান্ডা ছড়াচ্ছেন, সাবধান। আমরা সবাই দেশের কল্যাণের স্বার্থে সর্বদা ঐক্যবদ্ধ আছি।
উল্লেখ্য, গত ১১ নভেম্বর সোমবার সচিবালয় ঘেরাও করে উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামের সামনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা পাঁচ দফা দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন। তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নাহিদকে ইঙ্গিত করে একটি স্লোগান দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা- এমন কয়েকটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। এর ফলে উপদেষ্টা নাহিদ ও জবি শিক্ষার্থীদের ঘিরে তুমুল বিতর্কের সৃষ্টি হয়।
এরপরই মঙ্গলবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেশের ছাত্র-জনতা থেকে শুরু করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কেরা জুলাই বিপ্লবে নাহিদদের অবদান অনস্বীকার্য বলে লাল রংয়ের উপরে ‘উই আর নাহিদ’ হ্যাসট্যাগ দেওয়া শুরু করেন।