২১৭ বার করোনার টিকা নিয়ে আলোচনায় তিনি!

করোনাভাইরাস, যা প্রাণঘাতী হিসেবে আখ্যা পেয়েছিল আন্তর্জাতিকভাবে। এর প্রভাবে হতাহতের ঘটনায় বিশ্বব্যাপী মহামারী ঘোষণা করেছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। সেই সময় থমকে গিয়েছিল গোটা বিশ্ব। এই ভাইরাস থেকে পরিত্রাণের উপায় খুঁজছিলেন বিজ্ঞানীরা। অবশেষে সফলতাও পান তারা। অল্প সময়েই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আবিষ্কার হয় এই ভাইরাস প্রতিরোধী টিকা। স্বস্তি পায় গোটা মানবজাতি।

যদিও প্রথম দিকে মানুষের মাঝে এই টিকা নিয়ে কিছুটা বিভ্রান্তি ছিল। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা স্বাভাবিক হয়ে যায়। অবশ্য উন্নত বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অনেক নাগরিক টিকা নেওয়া থেকে বিরতই ছিলেন।

তবে ২১৭ বার করোনা টিকা নিয়ে বিশ্বজুড়ে আলোচনায় এসেছেন জার্মানির এক নাগরিক। ওই ব্যক্তির বয়স ৬২ বছর।
চিকিৎসা–সংক্রান্ত পরামর্শ উপেক্ষা করে তিনি এই কাজ করেছেন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

ঘটনাটি নথিবদ্ধ হয়েছে বিশ্বখ্যাত ‘ল্যানসেট ইকফেকশাস’ ডিজিজেস সাময়িকীতে। এতবার টিকা নেওয়ার পরও ওই ব্যক্তি সুস্থ আছেন বলে জানা গেছে।

সাময়িকীতে বলা হয়েছে, ওই ব্যক্তি নিজের ব্যবস্থায় এসব টিকা কিনেছেন। ২৯ মাসের মধ্যে একে একে ২১৭ বার টিকা নিয়েছেন তিনি।

যদিও তার নাম–পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি ওই সমায়িকীতে।

ইউনিভার্সিটি অব এরলানজেন–নুরেমবার্গের গবেষকেরা বলেন, ওই ব্যক্তির শরীরে এর কোনও প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। টিকার কারণে তাকে ভুগতেও হয়নি।

বিশ্ববিদ্যালয়টির অণুজীববিজ্ঞান বিভাগের ড. কিলিয়ান সোবার বলেছেন, পত্রিকা পড়ে আমরা এ ঘটনা সম্পর্কে জানতে পারি। পরে আমরা ওই ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করি। বিভিন্ন শারীরিক পরীক্ষার জন্য আমরা তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে আমন্ত্রণ জানাই। তিনি খুব আগ্রহ নিয়ে আমাদের ডাকে সাড়া দেন।

ওই ব্যক্তি পরে রক্ত ও লালার নমুনা দিয়েছেন। এছাড়া গবেষকেরা আগে থেকে জমা থাকা তার হিমায়িত রক্তের নমুনাও পরীক্ষা করে দেখেছেন। গত দু–তিন বছরে তার কাছ থেকে রক্তের এসব নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল।

ড. কিলিয়ান বলেন, “আমরা নিজেরাই ওই ব্যক্তির কাছ থেকে রক্তের নমুনা নিতে পেরেছিলাম। এ–সংক্রান্ত গবেষণা যখন চলছিল, তখনও তিনি নিজে জোর দিয়ে চেয়ে আরও করোনার টিকা নিয়েছেন।”

এই গবেষক আরও জানান, করোনার টিকা নেওয়ার পর শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা ঠিক কীভাবে প্রতিক্রিয়া দেখায়, এ–সংক্রান্ত গবেষণায় ওই ব্যক্তির নমুনাগুলো ব্যবহার করা হয়েছে।

প্রমাণ হিসেবে ওই ব্যক্তির কাছ থেকে করোনার টিকার ১৩০টি সরঞ্জাম জব্দ করেছেন ম্যাগদেবুর্গ শহরের সরকারি কৌঁসুলি। তিনি এ ঘটনায় জালিয়াতি–সংক্রান্ত তদন্ত শুরু করেছেন। তবে ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে ফৌজদারি অভিযোগ আনা হয়নি। সূত্র: বিবিসি, দ্য গার্ডিয়ান, ওয়াশিংটন পোস্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

What do you like about this page?

0 / 400

Verified by MonsterInsights