ঘাতক রিকশাচালককে গ্রেফতারের আল্টিমেটাম, জাবিতে মশাল মিছিল

জাবি প্রতিনিধি
ব্যাটারিচালিত রিকশার ধাক্কায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) মার্কেটিং বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী (৫৩ ব্যাচ) আফসানা করিম রাচি নিহতের ঘটনায় ঘাতক রিকশাচালককে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার করে সর্বোচ্চ শাস্তির আওতায় আনাসহ ১১ দফা দাবিতে মশাল মিছিল করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে মশাল মিছিলটি শুরু হয়। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন, বটতলা, সিএসই ভবন সংলগ্ন সড়ক ঘুরে পুনরায় শহীদ মিনার চত্বরে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।

এসময়, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ঘাতক রিকশাচালককে গ্রেফতার করে সর্বোচ্চ শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানান।

এর আগে, ওইদিন সকাল সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের ফটকে তালা লাগিয়ে দিয়ে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তারা।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের অন্য দাবিগুলো হলো- আগামী ৭ কর্মদিবসের মধ্যে সিন্ডিকেট মিটিং ডেকে জাবি মেডিকেল সেন্টারে মুমূর্ষু ব্যক্তিদের পর্যাপ্ত চিকিৎসার জন্য সু-ব্যবস্থা (ভ্যাক্সিনেশন, আইসিইউ এবং লাইফ সাপোর্ট এম্বুলেন্সসহ সকল আধুনিক চিকিৎসা সরঞ্জাম নিশ্চিত করতে হবে) গ্রহণ করতে হবে; রাচিকে মরোণত্তর ডিগ্রি দিতে হবে এবং তার পরিবারকে ১ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে; ক্যাম্পাসে অটোরিকশা সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে দিতে হবে। বিকল্প হিসেবে প্যাডেল চালিত রিকশা, এবং স্টুডেন্ট শাটেল (শাটেল বাস নয়) চালু করতে হবে; সম্পূর্ণ ক্যাম্পাসকে সিসিটিভির আওতায় নিয়ে আসা এবং পর্যাপ্ত পরিমাণের আলোর ব্যবস্থা করা; পর্যাপ্ত পরিমাণের নিরাপত্তা বাহিনী রাখতে হবে এবং ক্যাম্পাসে বহিরাগত প্রবেশ নিষেধের উপর কঠোর জোর দিতে হবে; রাচির স্মরণে ক্যাম্পাসে স্থায়ী স্মৃতিফলক নির্মাণ করতে হবে এবং নির্মাণাধীন সেন্ট্রাল লাইব্রেরির একটি অংশের নাম রাচির নামে করতে হবে; কয়েকজন স্বাধারণ শিক্ষার্থী এবং ৫৩ ব্যাচের কয়েকজনকে তদন্ত কমিটিতে পর্যবেক্ষক হিসেবে রাখতে হবে এবং সকল দাবি মানা হচ্ছে কিনা সেই বিষয়ে অবগত করতে হবে; আফসানা করিম রাচির বিদায়ী আত্মার মাগফেরাত কামনার জন্য কেন্দ্রীয়ভাবে দোয়া মাহফিলের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে এবং উক্ত বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে; রাস্তাগুলোর মোড়ে সাইড মিরোরের ব্যবস্থা করতে হবে; এবং ফুটপাত নির্মাণ করতে হবে।

এসময়, শিক্ষার্থীরা দাবিগুলোর বিষয়ে দৃশ্যমান কোন অগ্রগতি না দেখলে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। পাশাপাশি ৫৩ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা শ্রেণি কার্যক্রমের ফিরবে না বলেও জানিয়েছেন একাধিক শিক্ষার্থীরা।

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি ঘাতক চালককে শনাক্ত করে তার সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার জন্য। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ইতিমধ্যে এই ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে। পাশাপাশি ঘটনাটি তদন্তে কমিটি গঠন করা হয়েছে। আর শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো খুবই যৌক্তিক। ইতিমধ্যে আমরা অটোরিকশা ক্যাম্পাসে নিষিদ্ধ করেছি এবং বাকি দাবিগুলো বাস্তবায়নেও কাজ করছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights