‘ঘোষণাপত্রে সবার আগে খুনি হাসিনার বিচার দেখতে চায় বাংলার মানুষ’
ভোলা প্রতিনিধি :
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়কারী সারজিস আলম বলেছেন, ‘যেই স্বপ্ন নিয়ে জুলাই আন্দোলনে আমরা রক্ত দিয়েছি, জীবন দিয়েছি, যেই স্বপ্নগুলো দেশকে নিয়ে দেখি- সেগুলো ঘোষণাপত্রে লিখিত আকারে থাকা উচিত। তবে ঘোষণাপত্র যেন মাত্র কয়েক জনের কথায় না হয়। সেগুলো যেন প্রত্যেকটি জেলার, প্রত্যেকটি থানার সাধারণ মানুষের কথা হয়।’
শুক্রবার সকালে দ্বীপ জেলা ভোলায় জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্রের জনমত তৈরিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গণসংযোগের অংশ হিসেবে লিফলেট বিতরণ ও পথসভায় যোগে দিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেন, ‘গত ১৫ বছর ধরে বাংলাদেশের জনগণ একটি নজিরবিহীন ফ্যাসিবাদী ও মাফিয়া শাসনের অধীনে চরম জুলুম ও নির্যাতনের শিকার হয়েছে। তাই বাংলার মানুষ হাতে হাত রেখে বাংলার মাটি থেকে স্বৈরাচার হাসিনা সরকারকে লড়াই করে বিদায় করেছে। সেজন্য ২৪’র অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্রে সবার আগে স্বৈরাচারী খুনি হাসিনার বিচার দেখতে চায় বাংলার মানুষ।’
তিনি আরও বলেন, ‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, খুনি হাসিনাসহ যাদের নির্দেশে এতো মানুষকে খুন করা হয়েছে, রক্ত ঝরানো হয়েছে, তাদের বিচারের শাস্তির স্পষ্ট কথা এই ঘোষণাপত্রে থাকতে হবে। আমরা সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের সাথে কথা বলেছি, তারা একাত্মতা প্রকাশ করে আমাদের ৭ দফা দাবিকে যৌক্তিক বলে জানিয়েছেন।’
সারজিস বলেন, ‘বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এই ঘোষণাপত্রে সবার আগে ছাত্রদের অভ্যুত্থানে আওয়ামী খুনি ও দোসরদের বিচার নিশ্চিত করার স্পষ্ট অঙ্গীকার ব্যক্ত করতে হবে। এই ঘোষণাপত্রে প্রত্যেকটি জেলা ও উপজেলার শ্রমিক মেহনতী মানুষের আত্মত্যাগের কথা উঠে আসতে হবে। এটি যেন মাত্র কয়েকজনের কথা না হয়।’
তিনি বলেন, ‘খুনি হাসিনা গোপালগঞ্জের সিন্ডেকেট বসিয়েছিল। তার পরিবার প্রত্যেকটি জায়গায় সিন্ডেকেট বসিয়ে জনগণের অধিকার কেড়ে নিয়েছিল। সেই গুলোকে শেষ করে সমতার একটি বাংলাদেশ দেখতে চায় বাংলার মানুষ।’
তিনি আরও বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারকে সামনে রেখে সারা বাংলাদেশে ছাত্র জনতা ঐক্যবদ্ধভাবে এই দেশ থেকে খুনি শেখ হাসিনাকে বিতাড়িত করে ভারতে পাঠিয়েছে। তাই যেই ব্যানারকে সামনে রেখে একটি বড় অভ্যুত্থান হলো সেই ব্যানারের নাম সুস্পষ্টভাবে ওই ঘোষণাপত্রে থাকতে হবে।’
সারজিস বলেন, গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি, আহতদের সরকারি খরচে চিকিৎসা, আওয়ামী খুনি ও তাদের দোসরদের বিচার এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্ব পরিষ্কারভাবে উল্লেখসহ সাত দফা যৌক্তিক দাবি নিয়ে রাষ্ট্র জুলাই ঘোষণাপত্র দ্রুত বাস্তবায়ন করবে বলে আশা করেন।
কর্মসূচিতে জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন, সহ সমন্বয়ক রাসেল মাহমুদ, সমন্বয়ক এম এ সাঈদ, কেন্দ্রীয় সদস্য আরিফুর রহমান তুহিন, আব্দুল্লাহ আল-মামুন ফয়সাল, জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষারসহ ভোলার শত শত সমন্বয়ক শিক্ষার্থী-জনতা উপস্থিত ছিলেন।